,

ব্রিজের কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার মোগড়ায় ধাতুরপহেলা নামক স্থানে হাওড়া নদী খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অনিয়মের পাশাপাশি নির্মাণ কাজ শেষ না করেই ঠিকাদার পালিয়ে গেছে। এতে চলতি বর্ষা মৌসুমে চরম দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাসহ ২২টি গ্রামের হাজারো মানুষ।

সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদাররা কাজ ফেলে পালিয়ে যাওয়ায় উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ২২টি গ্রামের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাঁশের সাঁকো দিয়ে অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে পারাপার করছে হাজার হাজার মানুষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বর্তমান সরকার ২০১৬ সনের ১৬ই মার্চে ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউপির ধাতুরপহেলা নামক স্থানে হাওড়া নদী খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ গত বছর শুরু করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার মো. ফিরোজ। গত বছর স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এই ব্রিজ নির্মাণ কাজের উদ্ভোধন করেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ২২টি গ্রামের জনসাধারণের যাতায়াতের একমাত্র যোগসূত্র এই ব্রিজ। কিন্তু অর্ধেক কাজ করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আজ প্রায় এক বছর যাবত পারাপারের জন্যে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেই ব্রিজের বাকি অংশের কাজ বন্ধ রেখেছেন। এমতাবস্থায় প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় এবং নদী পারাপারের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীসহ ২২টি গ্রামের ভুক্তভোগী জনসাধারণ।

স্থানীয় বাসিন্দা মনিয়ন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান সিরাজ ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, আমার একমাত্র মেয়ে অথৈ জাহান (৮) তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী স্কুলে যাওয়ার সময় সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। এছাড়া স্কুল-কলেজগামী কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকার সাধারণ জনগণ প্রায়ই এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে গিয়ে নদীতে পড়ে আহত হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. জামিরুল ইসলাম মামুন বলেন, এমতাবস্থায় স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিকে নজর দিয়ে হলেও যেন তাড়াতাড়ি ব্রিজের কাজটি সম্পন্ন করা হয় এবং যতদিন ব্রিজের কাজ সম্পন্ন না হয় ততদিন যেন বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করা হয়।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে এই ব্রিজের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার মো. ফিরোজের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলার নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল হক জানান, বাজেটে ঠিকাদারের কোনো বিকল্প রাস্তা তৈরি করার খরচ ধরা হয়নি। তারপরেও ঠিকাদারকে চাপের মধ্যে রাখা হয়েছে যেন দ্রুত বাঁশ দিয়ে মানুষ চলাচলের উপযুক্ত একটি রাস্তা তৈরি করা হয়। সেই সঙ্গে দ্রুত এই ব্রিজের কাজটি সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর