,

বগুড়ার ধুনটে অভ্যন্তরীণ রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : ভয়াবহ নাব্যতা সংকটের কারণে গত ১৫ দিন ধরে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর শহড়াবাড়ি ঘাট থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে মালামাল পরিবহনসহ যাত্রীদের চলাচলে সমস্যার পাশাপাশি বিরূপ প্রভাব পড়েছে নৌযান পরিবহন ব্যবসায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর শহড়াবাড়ি ঘাট থেকে বৈশাখী চর, নাটুয়ার পাড়া, শংকরপুর, সানবান্ধা ঘাট, বোয়াল চর, মাঝিড়া, মল্লিকপাড়া, মেলানদহ চর, কালিবাড়ি, মাঝিড়া, শনপচা, ধারাবর্ষা, তারাকান্দি ও কেষ্টার চরে ইঞ্জিনচালিত নৌকা যাতায়ত করে। প্রতি বছর এই ঘাট জেলা পরিষদ থেকে বার্ষিক ইজারা বন্দোবস্ত দেওয়া হয়।

যমুনা নদীর শহড়াবাড়ি নৌ ঘাটের ইজারাদার হযরত আলী জানান, এ বছর ২০ লাখ টাকায় শহড়াবাড়ি ঘাট ইজারা বন্দোবস্ত নেওয়া হয়। এই ঘাট থেকে যমুনা নদীর ১৪টি রুটে ইঞ্জিনচালিত শতাধিক নৌকা চলাচল করে। প্রতিদিন এসব নৌকায় মালামাল ওঠানো এবং নামানোর কাজে জড়িত পাঁচ শতাধিক শ্রমিক।

বর্তমানে নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে হ্রাস পাওয়ায় নদী বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর-ডুবোচর। এখন নদীতে পানি একেবারেই কমে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় ডোবার মতো হয়ে আছে। বর্ষা মৌসুম না আসা পর্যন্ত এগুলোর পরিবর্তন হবে না। যেখানে নদীর পানিতে এখন উথাল-পাতাল ঢেউ থাকার কথা, সেখানে জেগে উঠেছে বালু চর। খনন না করার কারণে নদীর এ অবস্থা হয়েছে। ফলে যাত্রীবাহী দুই- একটি নৌকা চলাচল করলেও মালবাহী সবগুলো নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

শহড়াবাড়ি গ্রামের মালবাহী নৌকার মালিক হাসান মাহমুদ জানান, প্রতি বছর শুস্ক মৌসুমের শুরু থেকেই নদীর নাব্যতায় নৌ চলাচল বন্ধ থাকে। এবার একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নদীতে পানি সংকটে অনেক বেশী পথ ঘুরে নৌকাগুলোকে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। এতে করে ইঞ্জিনের তেল খরচ ও সময় দুটিই বেশী ব্যয় হয়। এ কারণে নৌকা চালানো বন্ধ রাখা হয়েছে।

যাত্রীবাহী নৌকার মালিক মোহন মিয়া জানান, যমুনা বুকে চর জেগে ওঠায় ৫টি রুটে অনেক পথ ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। এতে জ্বালানী খরচ অনেক বেশী হয়। কিন্ত যাত্রীদের নিকট থেকে আগের মতই ভাড়া আদায় করতে হয়। এতে লোকসান হয়। তাই বাধ্য হয়ে যমুনা নদীতে নৌকা চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন।

নৌকার মাঝি মকুল হোসেন জানান, যমুনা নদীর ভাঙ্গনে সব কিছু হারিয়ে এখন নি:স্ব। নৌকায় কাজ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। কিন্ত নদীতে চর জেগে ওঠায় নৌকার মালিকরা আর নৌকা চালাচ্ছেন না। তাই অভাবের তাড়নায় দূর্বিষহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর