,

‘টাকা নিয়ে’ ভোট না দেওয়ার অভিযোগে মারধর!

জেলা প্রতিনিধি, বরগুনা: বরগুনার তালতলীতে জেলা পরিষদ নির্বাচনের জের ধরে এক নারী ইউপি সদস্য ও তার স্বামীর ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন জনপ্রতিনিধিরা।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার লাউপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নুরজাহান বেগম, তার স্বামী মাসুদ পিয়াদা, জেলে রিয়াজ, নূর হোসেন ও অজ্ঞাত আরো এক জেলে।

জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত আসন-১ থেকে নারী সদস্য পদে নির্বাচন করেন সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ সদস্য দেয়োয়ারা হামিদ। এতে তাকে ভোট না দেওয়ায় নুরজাহান বেগমের ওপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ ওই ইউপি সদস্যের। এ ঘটনার বিচার দাবি করে আজ থেকে ইউনিয়নের জনসেবা ছাড়া সব কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন জনপ্রতিনিধিরা।

ওই ইউনিয়নের নারী সদস্য রাহিমা বেগম বলেন, ‘নির্বাচনের জের ধরে আমার সহকর্মীকে রাস্তায় ফেলে জনসম্মুখে মারধর করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। ’

হামলার সময় গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন, হাতের আংটি ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন আহত ইউপি সদস্য নুরজাহান বেগম। তার স্বামীর পকেট থাকা নগদ ১২ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও করেন তিনি।

সোনাকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফরাজী মো. ইউনুচ বলেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচনে দেলোয়ারা হামিদকে ভোট না দেওয়ার সন্দেহে তার নাতি হৃদয় ফকির আমার পরিষদের সদস্য নুরজাহানকে নিয়ে কটূক্তি করেন। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হলে বিষয়টি আমি সমাধান করে দেই। ’

তিনি আরো বলেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালে আমার অনুপস্থিতিতে ওই প্রার্থী পরিষদে এসে জোর করে সকল ইউপি সদস্যকে পাঁচ হাজার করে টাকা দেন। ওই টাকা কেউ নিয়েছে, কেউ নেয়নি। তারপরেও তার দেওয়া টাকা ফেরৎ নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি বলেছি। কিন্তু ভোট না দেওয়ার সন্দেহে আমার পরিষদের সদস্যকে জনসম্মুখে মারধর করাটা খুবই দুঃখজনক। ওই হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আজ থেকে জনসেবা ছাড়া পরিষদের সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। ’

পরাজিত সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থী মিসেস দেলোয়ারা হামিদ  বলেন, ‘নির্বাচনে ওই ইউনিয়নের সকল সদস্যরা আমাকে ভোট দিবে বলে আমি তাদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার করে টাকা দেই। কিন্তু আমাকে তারা ভোট দেয়নি। এজন্য আমার নাতি হৃদয় ফকির ওই ইউপি সদস্যের কাছে টাকা ফেরত চায়। এনিয়ে কথাকাটাকাটি হওয়ায় আমার নাতি হৃদয়কে জুতা নিয়ে মারতে ওঠেন ওই নারী ইউপি সদস্য। পরে ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি সমাধান করে দেন। চেয়ারম্যান চলে যাওয়ার পরে আবারও ওই সদস্যের স্বামীর সঙ্গে এই বিষয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে আমার নাতি হৃদয় কিল-ঘুষি দেয়। নগদ টাকা, গলার চেইন, আংটি ও মোবাইল এগুলো কিছুই নেয়নি হৃদয়। ’

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘এখনো এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

এই বিভাগের আরও খবর