,

চেয়ারম্যানের সামনে `সিগারেট টানায়’ মামলা

জেলা প্রতিনিধি, রংপুর: একটি বেসরকারি সংস্থার জমিতে চায়ের দোকান করেন আবুল হোসেন। তাঁর দোকানে বেচাবিক্রিও প্রচুর, তাই সর্বক্ষণ লেগেই থাকে ক্রেতাদের ভীড়। একদিন দোকানে চা পান করতে আসেন ওই সংস্থার সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন। এমন সময় সিগারেট জ্বালিয়ে টানছিলেন এক ক্রেতা।

এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে চা বিক্রেতাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন চেয়ারম্যান। একপর্যায়ে দোকান উচ্ছেদ এবং চা বিক্রেতা ও তাঁর কলেজপড়ুয়া ছেলের নামে মামলা করেন। সেই মামলায় বাবা পালিয়ে বেড়ালেও আজ শনিবার (২০ জানুয়ারি) নিরাপরাধ ছেলে মেনহাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এমনি এক ঘটনা ঘটেছে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের পাওটানা হাটে।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পীরগাছা থানার ওসি সুশান্ত কুমার সরকার। তিনি বলেন, মেনহাজুল ইসলাম নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তারের পর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার পাওটানা বাজারে সাথী মজলিশ পাবলিক লাইব্রেরী নামে একটি বেসরকারি সংস্থার সংস্থার জমিতে ২৫ বছর থেকে চা বিক্রি করে আসছেন আবুল হাসেম। সর্বশেষ ওই চা দোকানের জামানত তিন লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এর মধ্যে দুই লাখ ৪৪ হাজার টাকা দুই কিস্তিতে কর্তৃপক্ষকে দেন আবুল হাসেম। বাকি টাকা দেওয়ার পর আইনানুযায়ী চুক্তিপত্র হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু ক্ষিপ্ত চেয়ারম্যান নাজির হোসেন তাকে দোকান বরাদ্দ না দেওয়ার জন্য কৌশলের আশ্রয় নেন। তিনি ওই মার্কেট সংস্কারের কথা বলে আবুল হাসেমকে দোকানের জায়গা ফাঁকা করতে নির্দেশ দেন। আবুল হাসেম দোকান সরিয়ে নিলে চেয়ারম্যান গোপনে তাঁর এক আত্মীয়কে দোকান ঘর ভাড়া দেন।

কিন্ত তাঁর আত্মীয় আব্দুর রাজ্জাক নিজে ব্যবসা না করে সেই দোকান ভাড়া দেন অন্যজনকে।

এদিকে আব্দুর রাজ্জাকের ভাড়াটিয়া ঘরে উঠার পূর্বেই গত বৃহস্পতিবার আবুল হাসেম ওই দোকানে তাঁর ব্যবসা শুরু করেন। এতে চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে সেই দিনই আবুল হাসেম ও তাঁর বিএ (সম্মান) পড়ুয়া ছেলে মেনহাজুল ইসলামকে আসামি করে পীরগাছা থানায় একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে দেখিয়ে শুক্রবার মেনহাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অসহায় আবুল হাসেম দীর্ঘদিন হতে চা ব্যবসা করে তাঁর ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা ও সংসার চালিয়ে করে আসছেন। সেই সাথে নিয়মিত দোকান ভাড়াও দিচ্ছেন। আবুল হাসেমসহ স্থানীয়রা অনুরোধ করার পরও তাকে দোকান ভাড়া দেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সাবেক ইউপি সদস্য আবু সাঈদ বলেন, একদিন হাসেমের দোকানের ভিতর চেয়ারম্যান নাজির হোসেন গেলে তাঁর সামনে একজন কাস্টমার সিগারেট খাওয়ায় ক্ষিপ্ত হন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসেমকে দোকান ভাড়া দেয়নি চেয়ারম্যান। আমরা স্থানীয়ভাবে সকলে অনুরোধ করি, তারপরও হাসেমকে ভাড়া দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে ছাওলা ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন বলেন, আমরা কাকে ভাড়া দিব, না দিব সেটা কি হাসেমের নিকট অনুমতি নিতে হবে? জামানতের বিষয়ে বলেন, সে প্রমাণ করুক কত টাকা কাকে দিয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর