,

কাশিয়ানীতে ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর’ ডাটাবেজে টাকা আদায়!

কাশিয়ানী প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে হতদরিদ্রদের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ডিজিটাল ডাটাবেজ অন্তর্ভূক্তিতে টাকা আদায়, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার রাজপাট ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী চালের ডিলার এম এম নাসির ও ইব্রাহিম মোল্যা এবং মহিলা ইউপি সদস্য লিপি বেগমের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠেছে। ডিলার ইব্রাহিম মোল্যা রাজপাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।

খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সাল থেকে সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে হতদরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী চালু করে সরকার। এ কর্মসূচীর আওতায় কাশিয়ানী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ১১ হাজার ৬০০ উপকারভোগী স্বল্পমূল্যে সরকারি চাল পান। চলতি বছরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ডিজিটাল ডাটাবেজ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে উপকারভোগীদের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরী এবং কার্ডধারী মৃত ও স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নাম পরিবর্তন করে প্রকৃত দরিদ্র, ভূমিহীন কৃষক, দিনমজুর, উপার্জনে অক্ষম ব্যক্তিদের নাম ডিজিটাল ডাটাবেজে অন্তর্ভূক্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়।

অভিযোগ উঠেছে, রাজপাট ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ডিলার এম এম নাসির ও ইব্রাহিম মোল্যা নতুন সংশোধিত উপকারভোগীদের ডিজিটাল ডাটাবেজে অন্তর্ভূক্তির নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করছেন। এছাড়া অর্থের বিনিময় ও স্বজনপ্রীতি করে ডিলাররা তাদের নিজস্ব লোকজনের নাম ডাটাবেজে অন্তর্ভূক্ত করেছেন বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। এ ইউনিয়নে ২০৪টি নতুন (সংশোধিত) কার্ড অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

বোরহান খন্দকার নামে একজন উপকারভোগী অভিযোগ করে বলেন, ‘মহিলা ইউপি সদস্য লিপি বেগম আমার নাম কেটে তার স্বামী সোহরাফ আলীর নাম অন্তর্ভূক্ত করেছেন। এছাড়া তিনি স্বজনপ্রীতি করে তার কাছের লোকজনের নাম তারিকায় অন্তর্ভূক্ত করেছেন।’

এ ব্যাপারে ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য লিপি বেগম তারিকুল নামে এক ব্যক্তির নাম কেটে তার স্বামী সোহরাব মোল্যার নাম অন্তর্ভূক্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমার স্বামীসহ নতুন ৭ জনের নাম তালিকায় দিয়েছি। আর এ জন্য ডিলার নাসিরকে ৩শ’ করে টাকা দিতে হয়েছে।’

টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ডিলার এম এম নাসির বলেন, ‘৩শ টাকা নেয়া হয়নি। তবে প্রসেসিং ও অফিস খরচ বাবদ ২শ’ করে টাকা নেয়া হয়েছে। উপজেলা খাদ্য অফিসে টাকা দেওয়া লাগে তো। অফিসে টাকা না দিলে কি তারা ফাইল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে।’

কাশিয়ানী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম তার অফিসে টাকা নেওয়ার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ‘এসবের দায়-দায়িত্ব ইউনিয়ন চেয়ারম্যান-মেম্বারদের। এখানে শুধু তদারকির দায়িত্ব আমাদের। ইউএনও স্যার বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমি সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করব।’

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘এ বিষয় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনিয়মের সত্যতা পেলে ডিলারশীপ বাতিল করা হবে।’

-লিয়াকত হোসেন লিংকন

এই বিভাগের আরও খবর