,

গোপালগঞ্জে সাত স্লুইসগেটে পানিশূন্য খাল

গোপালগঞ্জের গান্ধিয়াশুর স্লুইসগেট

বিডিনিউজ ১০ রিপোর্টগোপালগঞ্জে সাতটি স্লুইসগেট গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলার হাজার হাজার কৃষকের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এসব স্লুইসগেট দিয়ে পানি ওঠা-নামা করছে না। আর এতে হাজার হাজার পরিবারের কৃষি জমি চাষাবাদ, সেচ, পণ্য পরিবহন, গোসল, কাপড় ধোয়া, সংসারের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।

গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলায় মধুমতী নদীর পানি চাষাবাদে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার ও বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষায় গোপালগঞ্জের উলপুর, বৌলতলী, গান্ধিয়াশুর, ভেন্নাবাড়ি, বানিয়ারচর, জলিরপাড় ও গঙ্গারামপুরে মধুমতি নদীর শাখা খালের মুখে সাতটি স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়। স্লুইসগেটের মাধ্যমে খাল দিয়ে মধুমতী নদীর পানি ঢুকিয়ে গোপালগঞ্জ সদর, মুকসুদপুর, কোটালীপাড়া ও মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার হাজার হাজার একর জমিতে চাষাবাদ করা হতো।

বর্ষা মৌসুমে নদীতে অতিরিক্ত পানির চাপ হলে স্লুইসগেটের কপাট বন্ধ করে বন্যার কবল থেকে কৃষকের ফসল রক্ষা করা হতো। ১৯৯৮ সালের বন্যার পর খালগুলোতে প্রচুর বালু পড়ে নাব্য কমে যায়। এ ছাড়া মধুমতী নদীর শাখা খালগুলোর মুখ বালুতে ভরাট হয়ে যায়। ফলে শুস্ক মৌসুমে নদী থেকে খালে পানি ওঠা-নামা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১১ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড খালগুলো খনন করে পানি সরবরাহ সচল করে। তার পরই স্লুইসগেটগুলো বিকল হয়ে পড়ে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৌতলী গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম শরীফ বলেন, ‘স্লুইসগেটগুলো অকেজো হয়ে আমাদের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ স্লুইসগেট দিয়ে নদী থেকে পানি ওঠানামা করে না। ফলে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। উলপুর গ্রামের কৃষক নওশের চৌধুরী বলেন, ‘এ খালগুলো মধুমতী নদীর পানি গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় পৌঁছে দিত। এ পানি দিয়েই কৃষক সোনার ফসল ফলাতেন। এখন স্লুইসগেট বিকল হয়ে অভিশাপে পরিণত হয়েছে।’

গান্ধিয়াশুর গ্রামের গৃহবধূ মঙ্গলী পান্ডে (৩৬) বলেন, খাল শুকিয়ে গেছে। এখন ২/৩ কি.মি. দূরে নদীতে গিয়ে গোসল করতে হচ্ছে। খাবার, রান্না, কাপড়, বাসন ধোয়ার পানি সংকটে এখন আমরা দিশেহারা।

গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, আমরা স্লুইসগেটগুলো অপসারণ করব। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আশা করছি দ্রুতই এগুলো অপসারণ করতে পারব। পাশাপশি নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করে ভরাট সাতটি খাল খনন করা হবে। ইতিমধ্যে আমরা প্রকল্পের স্কিম করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্কিমগুলো পাঠানো হবে। অনুমোদন হলেই খাল খননের কাজ শুরু করব।

এই বিভাগের আরও খবর