,

হাসপাতালে বিভীষিকা, রক্তের সংকট, সব চিকিৎসককে তলব

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহতদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিবেশ।

চিৎকার, কান্না আর আহাজারিতে ভারী পুরো হাসপাতাল। শুধু হাসপাতাল নয়, হাসপাতালের সামনেও শ শ মানুষ তাদের স্বজনদের খুঁজে জড়ো হয়েছেন। তাদের ভারী নিঃশ্বাসে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো পরিবেশ।

আগুন ও বিস্ফোরণে জখম মানুষের জন্য জরুরিভাবে রক্তের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। সে জন্য এগিয়েও এসেছেন স্থানীয় রক্তদাতা এবং বিভিন্ন রক্তদাতা সংগঠনের সদস্যরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও রক্তদানের আহ্বান জানাচ্ছেন অনেকে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছে, পজিটিভ গ্রুপের রক্ত নিয়ে তেমন সংকট এখন পর্যন্ত হয়নি। অনেক রক্তদাতা পাওয়া গেছে যারা মেডিক্যালে গিয়ে ও ব্লাড ব্যাংকে রক্ত দিয়েছেন। তবে নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের সংকট রয়েছে।

হাসপাতালের সামনে ব্লাড ব্যাংক কাজ শুরু করলে সেখানে রাত দেড়টার দিকে নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত নেয়া নিয়ে হুড়োহুড়িও দেখা যায়।

নেগেটিভ রক্তের জন্য হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে হ্যান্ড মাইক হাতে মাইকিং করছেন গাউছিয়া কমিটির সদস্য রবিউল ইসলাম বাবু।

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে ইতোমধ্যে দুই শতাধিক আহত রোগী ভর্তি হয়েছে। তাদের জন্য প্রচুর রক্তের প্রয়োজন। বিশেষ করে নেগেটিভ রক্ত। তাই আমরা ও নেগেটিভ, বি নেগেটিভ, এবি নেগেটিভ রক্তের জন্য মাইকিং করছি।’

হতাহতদের জন্য হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে হাসান ফার্মেসিতে বিনামূল্যে ওষুধ সরবারহের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে শহরের সব সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ইলিয়াছ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে একে একে আনা হচ্ছে আহতদের। অ্যাম্বুলেন্স থেকে শুরু করে সিএনজিচালিত অটোরিকশাতে করেও হতাহতদের আনা হচ্ছে। আহত সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। দগ্ধদের চিকিৎসায় সব চিকিৎসককে হাসপাতালে আসার নির্দেশ দিচ্ছি। আপনারা শুধুমাত্র অ্যাপ্রোন পরে চলে আসুন।’

রোগীদের হাসপাতালে পরিবহনে সব অ্যাম্বুলেন্সকে নগর থেকে সীতাকুণ্ডে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সব ইন্টার্ন চিকিৎসককেও কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান।

আগুনে পুড়ছে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী কনটেইনার ডিপো। এরই মধ্যে আগুনে চার জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট কাজ করছে। তবে কনটেইনার ডিপোতে কোনো পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান।

আগুনে বেশ হতাহতের আশঙ্কা করছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। এরই মধ্যে শতাধিক আহতকে বিভিন্ন মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর