,

সুপার ও সহকারী সুপারের দ্বন্দ্বে বই পেল না শিক্ষার্থীরা

জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের দাসিয়ারছড়ার শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদ্রাসার তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর কেউই নতুন শিক্ষাবর্ষের বই পায়নি। বইয়ের আশায় দিনভর বসে থেকে বিকেলে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাদ্রাসার সুপার (সুপারিন্টেন্ডেন্ট) ও সহকারী সুপারের দ্বন্দ্বেই এ ঘটনা ঘটেছে। তবে মঙ্গলবারের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

জানা গেছে, বছরের প্রথম দিন রবিবার সকালে ফুলবাড়ী উপজেলার ৪৫টি মাধ্যমিক স্কুল ও ১৯টি দাখিল মাদ্রাসাসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের হাতে সরকারের বিনামূল্যের নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় নতুন এমপিওভুক্ত শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও সহকারী সুপারের দ্বন্দ্বে নতুন বই হাতে নেওয়া হয়নি তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর। বই না পেয়ে মন খারাপ করে বাড়ি ফিরেছে তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদ্রাসার সুপার হিসেবে আছেন আমিনুল ইসলাম, আর সহকারী সুপার শাহানুর আলম। কিন্তু শাহানুর নিজেকে সুপার হিসেবে দাবি করে আসছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন তারা। দুজনে আদালতে মামলাও করেন। তারা দুজনেই আলাদা আলাদা শিক্ষার্থীদের নতুন বর্ষের বইয়ের জন্য চাহিদা তালিকা দিয়েছেন। এই জটিলতায় প্রতিষ্ঠানটিতে বই সরবরাহই করা হয়নি।

অভিভাবক আমিনুল ইসলাম জানান, সপ্তম শ্রেণির বই নেওয়ার জন্য তার মেয়ে আয়শা সিদ্দিকা সকাল থেকে দিনভর মাদ্রাসায় নতুন বই পাওয়ার আশায় ছিল। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত বই না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয় তাকে। পরে বাসায় গিয়ে কান্নাকাটি করেছে সে। অভিভাবক নুর আলমেরও একই অভিযোগ। আয়শার মতো অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও নতুন বছরের বই ছাড়াই বাড়ি ফিরেছে।

শিক্ষার্থী হাবিবের বাবা আব্দুর রহমান মিয়া বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী বই পেল না। এতে বাচ্চাদের পড়ালেখার ক্ষতি হবে। তাদের মনোবল ভেঙে যাবে।’

সুপারিন্টেন্ডেন্ট আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে শিক্ষার্থীদের নতুন বইয়ের চাহিদা জমা দেওয়া হলেও বই পাওয়া যায়নি। শিক্ষার্থীদের হাতে অফিস থেকে বই দেবে বলে আমাকে জানিয়েছেন।’

এ বিষয়ে সুপার দাবিদার সহ-সুপার শাহানুর আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, ‘ওই মাদ্রাসার দুই শিক্ষক সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদের দাবি করে বইয়ের চাহিদা আলাদাভাবে জমা দিয়েছেন। তাদের কাছে শিক্ষার্থীর পুরো তালিকা চাওয়া হয়েছে। আশা করছি, আগামী মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিব।’

এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুল আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘দুই পক্ষের হাইকোর্টে মামলা চলায় সেখানে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া যাচ্ছে না। গত বছর আমার কর্মকর্তা নিজে গিয়ে বই বিতরণ করেছে এবারও করবেন।’

এই বিভাগের আরও খবর