,

নারায়ণগঞ্জে পাসপোর্ট অফিসে ভাঙচুর

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কাউন্টারের কয়েকটি গ্লাস ভাঙচুর করায় এক কানাডা প্রবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার ফতুল্লার ভূইগড় এলাকায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের স্থায়ী কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজমল হোসেন নামের ওই প্রবাসীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি ফতুল্লার উত্তর চাষাঢ়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা মোশারফ হোসেনের ছেলে।

আজমল হোসেন বলেন, ২০ বছর ধরে কানাডায় বসবাস করি। স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে কানাডায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশে এসেছি। তাদের পাসপোর্ট নেই। তাই কয়েক মাস আগে স্ত্রী মানসুরা আক্তারের জন্য পাসপোর্ট করতে অফিসে আসি। তখন এ পাসপোর্ট অফিসটি জালকুড়ি এলাকায় ছিল। ওই সময় সেখানেও তাদের সিকিউরিটি গার্ড এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বাইরে বের করে দেয়। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় ওই সিকিউরিটি গার্ডের সঙ্গে আমার তর্ক হয়।

তিনি বলেন, এখন পাসপোর্ট অফিসের নতুন ভবনে ৩ মাসের শিশু সন্তানের জন্য পাসপোর্ট করতে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সকালে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। প্রায় ৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে আবেদন জমা দেয়ার স্থানে যাই। সেখানে একজন লোক আবেদন জমা নিচ্ছেন। আবেদন জমা নেয়ার সময় তিনি প্রত্যেকের সঙ্গেই খারাপ আচরণ করছেন। কিছু না বুঝলে জানতে চাইবেন অথবা বুঝিয়ে দেবেন তিনি। কিন্তু তা না করে আবেদনপত্র ছুড়ে ফেলে দেন। লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকের সঙ্গেই এমন করতে দেখেছি।

আজমল বলেন, আমার সন্তানের আবেদনপত্র জমা দিলে তিনি আগের আবেদনকারীদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন আমার সঙ্গেও তাই-ই করেন। তখন তার কাছে সমস্যা জানতে চাই। তিনি আমাকে সমস্যা না বলে দূরে যেতে বলেন। তখন আমিও উচ্চস্বরে তার সঙ্গে কথা বললে তিনি আমার কাছে কিছু কাগজের কথা বলেন। এ সময় সেই কাগজগুলো আবেদনে রয়েছে এবং দেখিয়ে দিই। এরপরও তিনি বলেন, পরে দেখবো। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘুষি দিলে কাঁচ ভেঙে যায়। তখন তাৎক্ষনিক তাদের লোকজন এসে আমার স্ত্রী ও শিশু সন্তানের সামনে আমাকে মারধর করে টেনে-হিঁচড়ে তিন তলায় নিয়ে যায়। সেখানেও অনেক মারধর করে। এ সময় তাদের অফিসের একজন কর্মকর্তা আমাকে মারধর থেকে রক্ষা করেন।

নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, আবেদনপত্র গ্রহণের জন্য অফিস সহকারী মহসিন ওই ডেস্কে ছিলেন। পর্যায়ক্রমে অনেকের আবেদনপত্র গ্রহন করেছেন তিনি। আজমল হোসেন নামে এক ব্যক্তি তার শিশুর জন্য আবেদনপত্র জমা দেন। ওই আবেদনপত্রে ব্যাংক জমার স্লিপ ও কাগজপত্র সত্যায়িত ছিল না। বিষয়টি তাকে বোঝার পরও ক্ষিপ্ত হয়ে গ্লাসে ঘুষি দেন তিনি। তখন গ্লাস ভেঙে মহসিনের হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। এছাড়া গ্লাস ভাঙা টুকরো পড়ে একটি কম্পিউটারের মনিটরসহ গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম ভেঙে যায়।

আবেদনকারীকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, আহত অফিস সহকারীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে পাসপোর্ট অফিস ভাঙচুর করাসহ অফিস সহকারীকে মারধর করার ঘটনায় প্রবাসী আজমলকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সোমবার (১৬ নভেম্বর) তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

এই বিভাগের আরও খবর