,

গাজীপুরে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি, গাজীপুর: গাজীপুরের টঙ্গীতে রিপা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের স্বজনরা দাবি করছেন যৌতুকের কারণে রিপাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।

বৃহস্পতিবার রাতে বনমালা পূর্ব দত্তপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রিপার স্বামী আল আমীন, শ্বশুর কালাম মিয়া ও দেবর আলাদীনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত রিপা গাজীপুর পূবাইল থানার হায়দরাবাদ দক্ষিণ পাড়ার হাফিজ উদ্দিন মোল্লার মেয়ে।

নিহতের স্বজনরা জানান, প্রায় ২ বছর আগে পারিবারিকভাবে বনমালা পূর্ব দত্তপড়া এলাকার বাসিন্দা আল আমীনের সঙ্গে বিয়ে হয় রিপার। এরপর থেকে সে স্বামীর বাড়িতেই থাকতেন। বিয়ের সময় স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের কোনো চাওয়া ছিল না। এরপরও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে নগদ অর্থ, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি দেন রিপার বাবা। এছাড়া টঙ্গীর একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক কারখানায় চাকরির সুযোগ করে দেন আল আমীনকে।

বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানা অজুহাতে রিপাকে তার বাবার কাছ থেকে টাকা এনে দিতে বলে। এ নিয়ে রিপার সংসারিক জীবনে শুরু হয় অশান্তি। বাবার কাছে বলে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ছোট-খাটো আবদার কয়েকবার রক্ষাও করে সে। কিন্তু ৫-৬ মাস আগে তারা রিপার কাছে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করলে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শুরু হয় নির্যাতন।

এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে ঝগড়া হয় রিপার। রাত ১০টায় শ্বশুর কালাম মিয়া মুঠোফোনে রিপার অসুস্থতার কথা জানালে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। তারা রিপাকে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে হাসপাতালে গিয়ে রিপার লাশ এবং তার গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান স্বজনরা। রিপাকে যৌতুকের কারণেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইছে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করেন তারা।

খবর পেয়ে থানা পুলিশের এসআই শেখ সজল হোসেনসহ একদল পুলিশ হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মো. জাবেদ মাসুদ জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী, শ্বশুর ও দেবরকে আটক করা হয়েছে। লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বলতে পারব এটি হত্যা না আত্মহত্যা। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর