,

সেই বৃদ্ধ দম্পতি পাচ্ছেন নতুন ঘর

ইউএনওর আশ্বাসে শিগগির নতুন ঘর পাচ্ছেন দম্পতি আব্দুল হক ও রহিমা বেগম

জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় পলিথিনে মোড়া খড়ের তৈরি ঘরে বসবাস করা বৃদ্ধ দম্পতি আব্দুল হক ও রহিমা বেগম অবশেষে পাচ্ছেন নতুন ঘর।

শনিবার (৬ মার্চ) সকালে আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের দারখোর ধনুপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ দম্পতি আব্দুল হক (৬৮) ও রহিমা বেগম (৬৩) পলিথিনে মোড়া খড়ের ঘরে বসবাস করেন। তাও আবার ভাঙাচোরা। ছাউনি খড়ের। সেটাও কোথাও কোথাও ভেঙে গেছে। দিনে সূর্যের আলো আর রাতে আকাশের চাঁদ-তারা উঁকি দেয়।

এমনই জীর্ণ এক ঘরে বাস করছেন তারা। ২০ ফেব্রুয়ারি বৃদ্ধ দম্পতিকে নিয়ে ‌‘পলিথিনে মোড়া খড়ের ঘরে কাটছে বৃদ্ধ দম্পতির জীবন’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে বৃদ্ধ দম্পতি আবেদন করলে নতুন ঘর পাওয়ার আশ্বাস দেন ইউএনও।

আব্দুল হক পেশায় একজন দিনমজুর। স্ত্রী রহিমা বেগম গৃহিণী। এক সময় রহিমা বেগম কাজ করতে পারলেও বয়সের ভারে আর অসুস্থতার কারণে এখন আর কোনো কাজ করতে পারেন না।

জানা গেছে, হাঁপানি রোগে আক্রান্ত ও বয়সের ভারে তেমন কাজ করতে পারেন না আব্দুল হক। তার ভিটেমাটি থাকলেও নেই থাকার মতো ঘর। একদিন কাজে বের না হলে তার চুলায় হাঁড়ি উঠে না। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে খড় ও পলিথিন দিয়ে নির্মিত জরাজীর্ণ ভাঙা ঘরে বাস করেন। বৃষ্টির দিনে ঘরে ছাউনি দিয়ে পানি পড়লেও তাদের সেই ঘরেই থাকতে হয়। বৃদ্ধ দম্পতির তিন ছেলে থাকলেও তারা নিজ নিজ পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন। তারাও পেশায় দিনমজুর। মাঝেমধ্যে মন চাইলে বাবা-মাকে দেখতে আসেন তারা।

কথা হয় বৃদ্ধ আব্দুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি গরীব মানুষ তাই ঘর মেরামত করতে না পারায় ভাঙা ঘরে থাকি। ইউএনও স্যার বলেছেন, “তিনি তাকে আমাদের জন্য নতুন ঘর করে দেবেন।” এতে আমরা অনেক খুশি। শেষ বয়সে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারব।’

বৃদ্ধ আব্দুল হকের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, আমাদের থাকার মতো ঘর ছিল না, যা আছে তা ভাঙা। আমরা খুব কষ্ট করে থাকি। ইউএনও স্যার কষ্টের কথা শুনে আমাদেরকে আবেদন করতে বললে আমরা ঘরের জন্য আবেদন করি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘বৃদ্ধ দম্পতির বিষয়টি আগে জানতাম না। তারা কোনোদিন সহযোগিতার জন্য আসেননি। পরে প্রতিবেদন দেখে ও বৃদ্ধ দম্পতির খোঁজখবর নিয়ে তাদের আবেদন করতে বলেছি। তারা নিজে এসে আবেদন করেছেন। তাদের বসবাসের জন্য নতুন ঘর করে দেব।’

এই বিভাগের আরও খবর