,

ভুয়া দুদক কর্মকর্তার কাণ্ড!

জেলা প্রতিনিধি, মাদারীপুর: পেরোননি মাধ্যমিকের গণ্ডি। তবে সব ধরনের  শিক্ষাগত যোগ্যতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হয়ে ওঠেন দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা। নিজে এই দুদক কর্মকর্তা সেজে মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের দেখাতেন মামলার ভয়।

এভাবে প্রায় কমপক্ষে ৫০ ব্যক্তির কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন পাঁচ লক্ষাধিক টাকা। আনিসুর রহমান ওরফে বাবুল (৩৫) নামের এই ভুয়া দুদক কর্মকর্তাকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (৬ মার্চ) দুপুরে রাজৈর উপজেলার লুনদী এলাকা থেকে আনিসুর রহমান ওরফে বাবুল ও তার সহযোগী হাসিবুল মিয়াকে (৪২) গ্রেপ্তার করে মাদারীপুর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মাসুদ আলম।

মাদারীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই ব্রিফিংয়ে মাসুদ আলম বলেন, দুদক কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী আনিসুর রহমান একজন প্রতারক। তিনি এই পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময় মানুষকে প্রতারিত করেছেন। তার মূল টার্গেট ছিল ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।

প্রথমে তিনি পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করতেন। তারপর বিভিন্ন জায়গা থেকে ও বইয়ের স্মরণিকা থেকে তাদের সম্পর্কে ধারণা নিতেন। তথ্য পাওয়ার পর ওই সব কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের মোবাইল নম্বরে ফোন করে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এমন ভয় দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ আদায় করতেন।

মাসুদ আলম আরো বলেন, গত কয়েক বছর ধরে এই প্রতারক চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে অনেকের কাছ থেকে অনেক টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আমাদের কাছে অভিযোগ আসার পরে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ শাখা অভিযানে নামে। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ও বিকাশ অ্যাকাউন্টটি অন্য জেলার হওয়ায় খুব বেগ পেতে হয়েছে। পরবর্তী সময়ে প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের ধরতে সক্ষম হই।

মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার তদন্তকারী কর্মকর্তা রায়হান সিদ্দিকী শামীম বলেন, মামলা গ্রহণের পর আমরা অভিযান পরিচালনা করে চক্রের মূলহোতা আনিসুর রহমান ওরফে বাবুলকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সহযোগী হাসিবুল মিয়াকে ও তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন ও দুটি সিম কার্ড জব্দ করা হয়। প্রাথমিকভাবে তাদের সাথে আরো সদস্য থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের ধরতে আমাদের অভিযান চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর