,

নানুয়ার দীঘিরপাড়ের মণ্ডপে এবার সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা

জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা:  কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দীঘিরপাড়ের মণ্ডপে এবারের দুর্গা পূজায় থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরাসহ সার্বক্ষণিক কড়া নিরাপত্তা।

গত বছর এই মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখার ঘটনায় কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা হয়।

আলোচিত ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় পূজামণ্ডপসহ ঘরবাড়ি। এ ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

গত বছরের অনাকাঙ্ক্ষিত ওই ঘটনার জের ধরে নানুয়ার দীঘিরপাড়ে এবার পূজার আয়োজন হবে কিনা তা নিয়ে কয়েক মাস ধরে সংশয়ে ছিল নগরীর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তবে শেষ পর্যন্ত এই মণ্ডপে পূজার আয়োজন হচ্ছে এবং তা বেশ ঘটা করেই।

অতীতের ঘটনাকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে প্রশাসনও এবার এ মণ্ডপের নিরাপত্তায় সচেষ্ট হয়েছে।

বুধবার কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন ও আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম বাহাউদ্দীন বাহার বলেন, ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেই এ বছর নানুয়ার দিঘিরপাড়ে পূজা হবে। কেউ ষড়যন্ত্র করলে সে পালিয়ে বাঁচতে পারবে না।’

সরেজমিনে বুধবার দেখা যায়, নানুয়ার দীঘিরপাড় মণ্ডপে পূজা আয়োজন নিয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন মণ্ডপ কমিটির সদস্য রাজিব সাহা।

তিনি বলেন, ‘শুক্রবার থেকে মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে। সবাই খুব আনন্দে আছে। আমরা পুরনো ব্যথা ভুলে গিয়ে পূজার আনন্দে মেতে উঠতে চাই।’

দর্পণ সংঘ পূজা উদযাপন কমিটির ব্যানারে ১৯৬৬ সাল থেকে নানুয়ার দীঘিরপাড়ে দুর্গাপূজার আয়োজন হয়ে আসছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী ও নব্বই দশকের কয়েক বছর ছাড়া নিয়মিতই এখানে অস্থায়ী মণ্ডপ তৈরি করে পূজার উদযাপন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

দর্পণ সংঘ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অচিন্ত্য দাস টিটু বলেন, ‘এ বছর নানুয়ার দীঘিরপাড়ে পূজা মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। এছাড়াও কমিটির ২১ জনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মণ্ডপ পাহারা দেয়ার। এ বছর মণ্ডপের বাইরে কোনো থিম থাকবে না।’

কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, ‘পূজায় নিরাপত্তা দিতে কয়েক স্তরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। কেউ কোনো ধরনের নাশকতা করে পালিয়ে যেতে পারবে না।’

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘এবার নানুয়ার দীঘির পাড়সহ জেলার সবক’টি পূজামণ্ডপে সর্বোচ্চ সতর্কতা থাকবে। সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি আনসার সদস্যদের দিয়ে সার্বক্ষণিক পাহারাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, এ বছর কুমিল্লা সিটি করপোরেশনসহ পুরো জেলায় ৭৯৫টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর