,

ঠাকুরগাঁওয়ে ‘টাকায় খাসজমিও রেকর্ড!’

জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে ভূমি জরিপ ও নকশার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জরিপের কাজে অংশ নেওয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ভূমি নকশার কাজে আসা আমিনরা প্রতি শতাংশ জমি হিসেবে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ দাবি করছেন। তবে প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে, তবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর মৌজায় গত মার্চ মাস থেকে ভূমি জরিপ ও নকশার কাজ শুরু হয়। প্রতিটিতে তিনজন করে মোট ২৮টি গ্রুপে ভাগ হয়ে এ কাজ সম্পাদনের জন্য মাঠে নেমেছেন আমিনরা। কাগজপত্র ও দখলস্বত্ব প্রদর্শন সাপেক্ষে একজন জমির মালিকের নাম রেকর্ডভুক্ত হচ্ছে। কিন্তু মোটা অঙ্কের ঘুষ বাণিজ্যের বিনিময়ে সরকারি খাসজমিও দখলদারদের নামে রেকর্ডভুক্ত করা হচ্ছে। এই কাজে প্রতি গ্রুপে রয়েছে একাধিক দালালচক্র। সম্প্রতি ঘুষের টাকা ফেরতের জন্য জরিপ কাজে আসা কর্মকর্তাদের ভাড়া করা বাড়ি ঘেরাও করে প্রতিবাদ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

এ ব্যাপারে শান্তিনগরের বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক ভুক্তভোগী উৎপল রায় বলেন, প্রতি শতাংশ জমির জন্য এক থেকে দেড় হাজার টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। আর যেসব জমির মালিকানায় অসংগতি রয়েছে সেসব জমিতে শতাংশপ্রতি তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। তিনি তাঁর বাড়ির ১৫ শতাংশ জমির রেকর্ডভুক্তির জন্য সেলিম মিয়া নামের এক সর্দার আমিনকে ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন।

জগন্নাথপুর বেহারিপাড়ার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকারিভাবে এই কাজের জন্য কোনো টাকা দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও ঠাকুরগাঁওয়ে ঘুষ না দিলে কোনো কাজ হচ্ছে না। এ কাজে সংশ্লিষ্ট সর্দার আমিন, চেইনম্যান ও অন্যরা বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। সব জেনেশুনে বাধ্য হয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাত শতাংশ জমির জন্য সাত হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে টোকেন নিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে প্রধান অভিযুক্ত সর্দার আমিন সেলিম মিয়া বলেন, এই কাজের জন্য যে টাকা নেওয়া হয়, তা ওপরের মহলের নির্দেশে নেওয়া হয়।

সর্দার আমিন নজরুল ইসলাম মোটা অঙ্কের ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি জোর করে কারো কাছ থেকে কিছু নিই না। ’

ঠাকুরগাঁও সদর সহকারী সেটলমেন্ট অফিসার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি না নিয়ে তিনি কোনো কথা বলতে পারবেন না।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামশুজ্জামান জানান, জরিপের কাজে অর্থ নেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

এই বিভাগের আরও খবর