,

‘টিসিবির কার্ড’ আওয়ামী লীগ নেতার হাতে

জেলা প্রতিনিধি, পিরোজপুর: পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলায় দুই আওয়ামী লীগ নেতা টাকা দিয়ে টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) কার্ড পেয়েছেন।

বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দুই সদস্যের বিরুদ্ধে ২০০ টাকার বিনিময়ে কার্ড বিতরণের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমিন এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আজমীর টিসিবির কার্ড পেয়েছেন।

তাঁরা দুজনই ধনাঢ্য। অথচ অনেক দরিদ্র পরিবার কার্ড পায়নি।

এ বিষয়ে রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি টিসিবির কার্ড পেয়েছি। এ জন্য ইউপি সদস্য রফিকুলের আত্মীয় আজমীর খরচের কথা বলে টাকা চান। পরে আমিসহ আরো কয়েকজন ইউপি সদস্য জেসমিনের বাসায় গিয়ে ২০০ করে টাকা দিয়ে আসি। ’

আজমীর বলেন, ‘গরিব না হয়েও আওয়ামী লীগের পদে থেকে কার্ড নেওয়াটা ভুল হয়েছে। আর যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলাম পরে ফেরত দিয়েছি। ’

এই ইউনিয়নের গগন গ্রামের মসজিদ বাড়ির হতদরিদ্র লুৎফর রহমান অভিযোগ করেন, ইউপি সদস্য জেসমিন কার্ডের জন্য খরচের কথা বলে তাঁর কাছ থেকে ২০০ টাকা এবং তাঁর চাচাতো ভাই নান্না মিয়ার কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়েছেন।

১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আল আমিন জানান, ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম কার্ড বাবদ তাঁর কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়েছেন। দিনমজুর বাদশা মিয়া জানান, তাঁর কাছ থেকেও ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের কথা বলে আজমীর ২০০ টাকা নিয়েছেন।

এদিকে ইউপি সদস্য জেসমিন আক্তারের বাড়ি থেকে তালিকাভুক্ত হতদরিদ্র মানুষের আইডি কার্ডের সঙ্গে গেঁথে রাখা টাকার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ভাইরাল হওয়া টাকার ছবি তাঁর বাড়ি থেকে তোলা স্বীকার করে ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য জেসমিন আক্তার বলেন, ‘রুহুল আমিনসহ কয়েকজন আমার বাড়িতে এসে জানান, ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম টিসিবির কার্ডের খরচপাতির জন্য প্রত্যেককে ২০০ টাকা করে জমা দেওয়ার জন্য বলেছেন। সেই কথা অনুযায়ী আমি প্রত্যেকের কাছ থেকে ওই টাকা জমা নিয়েছি। ’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওয়ার্ড আ. লীগ নেতা রুহুল আমিনের সঙ্গে আমার শত্রুতা রয়েছে। এর জের ধরে তিনি ষড়যন্ত্র করে এমন অভিযোগ এনেছেন। ’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে জানান, এমনটা শুধু ওই একটি ওয়ার্ডে নয়, কমবেশি প্রতিটি ওয়ার্ডে অনিয়ম হয়েছে। এই ওয়ার্ডের ঘটনা জানাজানি হলে সেসব ওয়ার্ডে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে টাকা ফেরত দিতে বলেছি। অন্য সব ওয়ার্ডে কোনো সদস্য টাকা রেখেছেন কি না তা আমার জানা নেই। বিষয়টি তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ’

নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ’

এই বিভাগের আরও খবর