,

টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে ধান, কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ

জেলা প্রতিনিধি, নাটোর: একদিকে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, অন্যদিকে সার সংকট। এর সঙ্গে আবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে ভারি বর্ষণ। এই তিনে আমন ধানের ফলন নিয়ে শঙ্কায় নাটোরের সিংড়া উপজেলার কৃষকরা।

শুক্রবার সকালে উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের মাড়িয়াপাড়া গ্রামের কৃষক এমদাদ হকের স্ত্রী লাবনী বেগম বলেন, অতিকষ্টে লাগানো ১০ বিঘা জমির আমন ধান এখন পানির নিচে। বাড়ির পাশেই স্বপ্নের সোনার ধান অথৈ পানির নিচে। এটা দেখলেই চোখে পানি আসে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। ধান নিয়ে অনেক আশা ছিল কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন পানির নিচে।

সিংড়ায় গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজানের পানিতে শুধু লাবনী বেগমেরই নয়, বরং স্বপ্ন ভেঙেছে এমন হাজারও কৃষকের।

একই গ্রামের কৃষক তহিদুল ইসলাম বলেন, সাত বিঘা জমির ধান গত তিন দিন ধরে পানিতে তলিয়ে রয়েছে। আরও ১০ বিঘা জমির ধান অথৈ পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। যদি বর্ষণ না থামে, তবে বাকি জমির ধানও তলিয়ে যাবে।

চৌগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদেও (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম ভোলা বলেন, হঠাৎ ভারি বর্ষণে পারুহারপাড়া, বেলঘরিয়া, মাড়িয়াপাড়া, কাজলাহার, বড়িয়া ও জামতলী এলাকার বেশ কিছু জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

ইতালি ইউপির ৫ নম্বর ওয়াডের্র সদস্য মকলেছুর রহমান জানান, তার ওয়ার্ডের শালমারা দক্ষিণ মাঠে প্রায় আড়াইশ বিঘা জমির আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

ইপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম বলেন, ভারি বর্ষণে ইতালি, পাকুরিয়া, শালমারা, সোনাপাতিল, ইন্দাসন, তিরাইল, ছাতুয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় এক হাজার বিঘা ধানের জমিতে পানি জমেছে। ইতোমধ্যে অনেক জমির ধান নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

রামানন্দ খাজুরা ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, ভোগা বসন্তপুর, সোয়াইড়, খাজুরিয়া ও কৈগ্রাম দক্ষিণ মাঠের কিছু জমির রোপা আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, আগাম বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় এ বছর উপজেলায় ২৩ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষাবাদ হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে অধিকাংশ এলাকার জমিতে পানি জমে গেছে।

সেলিম রেজা জানান, ৩০ হেক্টর জমির ধান পানিতে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত হয়েছে। তবে আগামী দু-একদিনের মধ্যে আবহাওয়ার উন্নতি হলে বাকি জমির ধানের কোনো ক্ষতি হবে না।

এই বিভাগের আরও খবর