,

‘ঘটনা ডাকাতি’, মামলায় হয়ে গেল চুরি!

জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর:  লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দপুর গ্রামে অস্ত্রের মুখে আবদুর রবের পরিবারের সদস্যদের বেঁধে ডাকাতি হয়েছে।

এ ঘটনায় থানায় চুরির মামলা হয়েছে। দাখিল করা ডাকাতির এজাহার বদলে পুলিশ কৌশলে চুরির মামলা নিয়েছে বলে বাদী আবদুর রবের অভিযোগ। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগী পরিবারটি।

এ ঘটনায় তারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

তবে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসলেহ উদ্দিন দাবি করেছেন, ভুক্তভোগীর তথ্যে বিভ্রান্তি ছিল। এ জন্য অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে চুরির মামলা নেওয়া হয়েছে। তাকে সম্পূরক এজাহার দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্তে ডাকাতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেভাবে চার্জশিট দেওয়া হবে।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, চরশাহী ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দপুর গাইনবাড়ির আবদুর রবের ঘরে ২২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ৮-১০ জন মুখোশধারী ডাকাত হানা দেয়। তারা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। আগ্নোয়াস্ত্রের মুখে স্ত্রী মরিয়ম বেগম, পুত্রবধূ অনিকা ফৌরদৌসসহ গৃহকর্তাকে জিম্মি করে বেঁধে ফেলা হয়। এ সময় তাদের মারধর করে ডাকাতরা স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসেটসহ সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার মালামাল লুটে নেয়।

এ ঘটনায় খবর দেওয়া হলে দাসেরহাট ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভিডিও ধারণ করে। পরদিন আবদুর রব থানায় ডাকাতি মামলা করার জন্য হাতে লিখে এজাহার দেন। পরে এটি থানায় কম্পোজ করার জন্য একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেখানে এজাহারটি বদলে ফেলা হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আবদুর রবের কাছ থেকে সই নেওয়া হয়। পরে তিনি (বাদী আবদুর রব) জানতে পারেন, ডাকাতি নয়, পুলিশ কৌশলে চুরির মামলা নিয়েছে।

ভুক্তভোগী আবদুর রব আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমি বয়স্ক লোক। পুলিশ এজাহার বদলে কাজটা ঠিক করেনি। আমি না পড়েই সরল বিশ্বাসে সই করেছি। এটা শতভাগ ডাকাতির ঘটনা। অথচ পুলিশ চুরির ঘটনা উল্লেখ করে মামলা নিয়েছে। আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ চাই। ’

মরিয়ম বেগম বলেন, ‘৮-১০ জন যুবক বয়সী মুখোশধারী ডাকাত পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জিম্মি করে আমাদের বেঁধে ফেলে। এক ঘণ্টার মধ্যে তারা মালামাল লুট করে পালিয়ে গেছে। এখনো আমরা আতঙ্কে আছি। ’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দাসেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। এ সময় খুদে বার্তা (এসএসএস) পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি জসিম উদ্দিন বলেন, যেকোনো মামলার বাদীর এজাহার বদলে ফেলা আইনসিদ্ধ নয়। এ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) বা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।

এই বিভাগের আরও খবর