,

গোপালগঞ্জে ‘ভুয়া কাগজে’ জমি দলিল!

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: ভুয়া দাখিলা ও পর্চায় জমি দলিল সম্পাদনের অভিযোগ উঠেছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো. মিল্লাত হোসেনের বিরুদ্ধে।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এ দলিলটি সম্পাদিত হয়। দলিল নম্বর ২২৯৩। এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

দলিল সূত্রে জানা গেছে, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া মৌজার আরএস ও এসএ ২৭০ ও ২৭৪ নং দাগের হাল বিআরএস ৬৮৭ নং দাগে রোকনউদ্দিনের নামে থাকা ৪১ শতাংশের মধ্যে ৫শতাংশ জমি লেবুতলা গ্রামের জামাল মোল্যা ও কেপেল মোল্যা দাতা সেজে পাকুরতিয়া গ্রামের সোহরাব হোসেনের মেয়ে জিবন্নাহার জুইয়ের নামে সাব কবলা করে দেন।

রোকনউদ্দিন মোল্যার ছেলে সবুজ মোল্যা বলেন, আমার বাবা ৩০ বছর আগে লেবুতলা গ্রামের ইউসুফ আলী মোল্যা গংদের কাছ থেকে ৪১ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। আমাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় জমি দলিল করা হয়নি। তখন ইউসুফ মোল্যা গং মাঠ জরিপে আমার পিতা রোকনউদ্দিন মোল্যার নামে ওই জমি বিআরএস রেকর্ড করিয়ে দেন। এরপর থেকে আমরা ওই সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে পাকুরতিয়া গ্রামের সোহরাব মোল্যার লোকজন আমাদের বাড়িতে এসে জমি দখলের পাঁয়তারা করে ও সীমানা নির্ধারণের পিলার ভেঙে ফেলে। তখন তাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি ইউসুফ মোল্যার ছেলে জামাল ও কেপেল মোল্যা পাকুরতিয়া গ্রামের সোহরাব হোসেনের মেয়ে জিবন্নাহার জুইয়ের কাছে আমাদের জমি বিক্রি করে দিয়েছেন।

সবুজ আরো বলেন, ‘আমরা অফিস থেকে কাগজপত্র তুলে দেখি আমার পিতার নামের বিআরএস পর্চা জাল করে তাদের নাম বসিয়ে ও জাল দাখিলা জমা দিয়ে মোহরি জুয়েল ও সাব রেজিস্ট্রার মো. মিল্লাত হোসেনের যোগসাজসে দলিল করিয়ে নিয়েছেন।’

জমির দাতা জামাল ও কেপেলের কাছে ভুয়া পর্চা ও দাখিলার সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা অশিক্ষিত মানুষ। দলিল পর্চা সম্পর্কে তেমন কিছু বুঝি না। মাঠে কাজ করা অবস্থায় সোহরাব মোল্যা আমাদের দুই ভাইকে উপজেলা গিয়ে জমির দলিলে সই করতে বলেন। তখন প্রয়োজনীয় কাগজের বিষয়ে জানতে চাইলে সোহরাব বলে তোমরা শুধু সই করে চলে আসবে। কাগজপত্র সব জোগাড় করা আছে। তখন আমাদেরকে এক লাখ টাকা দিয়ে দলিলে সই নেয়।

জিবন্নাহার জুইয়ের বাবা সোহরাব মোল্যার কাছে জানতে চাইলে তিনি জামাল ও কেপেলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তারা আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে জমি বিক্রি করেছেন। জাল দাখিলা ও পর্চা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।’

টুঙ্গিপাড়া সাব রেজিস্ট্রার মো. মিল্লাত হোসেন এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘জমির দাতা তথ্য গোপন করে এ দলিল করিয়েছেন। আমাদের দপ্তরে বি,আর,এস পর্চা ও দাখিলার কোন কপি থাকে না। এছাড়া ওই জমি সম্পর্কে অনলাইনে কোন নথি না থাকায় ভুলবশত দলিল সম্পাদন হয়ে গেছে।’

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) দেদারুল ইসলাম বলেন, ‘ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে এ রকম কোন দাখিলা দেয়া হয়নি। এছাড়া বিআরএস পর্চা ঘষামাজা করে অন্যের নাম বসানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর