,

অফিসে বসে প্রকাশ্যেই ঘুষ নেন ভূমি কর্মকর্তা

রাজশাহী অফিস: রাজশাহীর বড়কুঠি মহানগর ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, মিজানুরের এই ঘুষের টাকার ভাগ পান দপ্তরের সবাই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টাকা ছাড়া কোনো কাজই করেন না মিজানুর রহমান। রাখঢাক ছাড়াই অফিসে প্রকাশ্যেই ঘুষ নেন তিনি। তার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ তছরুপেরও অভিযোগ রয়েছে। গত বছরের ২২ থেকে ৩১ মে মিজানুরের দপ্তরে হিসাব তত্ত্বাবধায়ক (রাজস্ব) মো. ইসরাইল হোসেন ২০২০-২০২১ অর্থবছরের অডিট করেন। এরপর ২৩ জুন নিরীক্ষা প্রতিবেদন দেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বড়কুঠি মহানগর ভূমি অফিসের রেজিস্ট্রার পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রকৃত অপেক্ষা কম যোগফল দেখিয়ে সরকারের অর্থ তছরুপ করা হয়েছে। মিজানুর রহমান আত্মসাৎ করেছেন তিন হাজার ৫০৮ টাকা। এই টাকা তিনি জমা দেননি বলে মন্তব্য করা হয়েছে। সরকারি অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ থাকলেও মিজানুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বৃহস্পতিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) সকালে মিজানুর রহমানকে তার দপ্তরে বসেই সেবা নিতে আসা লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যায়। তার কক্ষেই বসেন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর শান্ত ইসলাম। তার সামনেই টাকা নেন মিজানুর। প্রথমে এক বৃদ্ধ সেবাগ্রহীতা মিজানুরকে ১০০ টাকার কয়েকটি নোট দিতে দেখা যায়।
এ সময় আবদুল হাকিম নামের ওই ব্যক্তি জানান, তার বাড়ি নগরীর উপশহরে। ভূমি অফিসে একটা কাগজ তুলতে এসেছিলেন। অনেক কাগজের মধ্য থেকে তার কাগজ খুঁজে বের করতে সময় লাগলো। তাই পিয়নদের জন্য টাকা দিলেন। তিনি আরো বলেন, ‘একটা পিয়নকে ১০টা টাকা না দিলে কাজটা করেও দিবে না। তাই দিলাম।’

এক তরুণের কাছ থেকে গুণে গুণে দুই হাজার ৫০০ টাকা নিতে দেখা যায় মিজানুর রহমানকে। টাকা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওই তরুণ বললেন, ‘টাকা হচ্ছে এই কাগজের জন্য।’ এটা কিসের টাকা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা বলতে পারব না।’

টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই ছেলের জমির খারিজের টাকা নিয়েছি।’ খারিজের জন্য কত টাকা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা এখন বলতে পারব না। কাগজপত্র দেখে বলতে হবে।’ এর আগে এক বৃদ্ধের কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা কোনো সমস্যা না। এটা কোনো ব্যাপার না ভাই। আমি আপনার সঙ্গে সাক্ষাতে কথা বলব।’

বোয়ালিয়া রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন মিয়া বলেন, ‘এই বিষয়গুলো আমি জানি না। আজ আমি অফিসের বাইরে। আগামী রবিবার অফিসে গিয়েই অভিযোগগুলো যাচাই করে দেখব।’

এই বিভাগের আরও খবর