,

‘পতাকা বিক্রি করে আনন্দ পাই, পরিবারও চলে’

হাটহাজারী: মোহাম্মদ নাছিম (২৫) সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই জাতীয় দিবসের সপ্তাহ দুয়েক আগে তিনি নিজ গ্রাম ছেড়ে অন্য পাড়া-মহল্লার পথে পথে ঘুরে বিক্রি করেন লাল-সবুজের ‘জাতীয় পতাকা’।

এটা তার পেশা নয়, চেতনা।একাত্তরে যুদ্ধ করতে পারেননি কিন্তু রক্তে রাঙা স্বাধীনতার প্রতি তার আজন্ম শ্রদ্ধা। লাখ লাখ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এই লাল সবুজের পতাকা বিজয়ের দিনে শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী মানুষের হাতে দেখতে ভালোবাসেন নাছিম। সেই ইচ্ছা থেকেই প্রতি বছর পতাকা হাতে ছুটে বেড়ান পথে প্রান্তরে।

পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে অল্প টাকা লাভে তিনি এবারও করোনা ঝুঁকি নিয়ে সবার হাতে তুলে দিচ্ছেন লাল-সবুজের পতাকা।
নাছিম মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ৪নং নিখলি ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের মোখলেস শিকদারের ছেলে।

করোনাকালেও পতাকা বিক্রির কাজটাকে কেন বেছে নিলেন-এমনটা জানতে চাইলে মঙ্গলবার মোহাম্মদ নাছিম বলেন, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে লাল-সবুজের এ পতাকা। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে আমি পতাকা বিক্রি করি।  এতে আমি খুব আনন্দ পাই, পরিবারও চলে।

চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়কের হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের সামনে তালুকদার লাইব্রেরিতে বসে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ভ্যানচালক বাবার পক্ষে তাদের ৬ সদস্যের পরিবার চালাতে বেশ হিমশিম খেতে হয়।

এমনটা দেখে পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে রাজমিস্ত্রীর পেশা বেছে নিলেও জাতীয় দিবসগুলোতে তিনি জাতীয় পতাকা বিক্রি করেন। এ থেকে যা আয় হয় তাতে কোনো রকমে সংসার চলে।

নাছিম জানান, আলাদা টিম করে ভাগ ভাগ হয়ে ফেরি করে পতাকা বিক্রি করতে দলবেঁধে বন্ধুদের সঙ্গে চলে যান বন্দর নগরী চট্টগ্রাম শহরে।

নগরীর মুরাদপুর এলাকার একটি হোটেলে রাত্রিযাপন করেন। প্রতিদিন সকালে বের হয়ে রাত অবধি ফের হোটেলে ফেরা পর্যন্ত বিভিন্ন সাইজ ও দামের জাতীয় পতাকা বিক্রি করেন।

তিনি বড় পতাকা ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, মাঝারি পতাকা ৭০-৯০ টাকা, ছোট পতাকা ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং হাত পতাকা ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করেন।

messenger sharing button
twitter sharing button
pinterest sharing button
linkedin sharing button

এই বিভাগের আরও খবর