রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম মুদাব্বিরুল ইসলাম বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে লোকাল গভর্নেন্স সাপোর্ট প্রোগ্রাম (এলজিএসপি)-৩ প্রকল্পের ৩৯টি কাজ সম্পূর্ণ হয় ছয় মাস আগে। প্রকল্পের ২৩ লাখ ২৪ হাজার টাকা দুটি সাব-মার্সিবল পাম্পসহ টিউবওয়েল এবং পানি নিষ্কাশন কাজে ব্যয় করা হয়।
“দুটি সাব-মার্সিবল পাম্পের মধ্যে একটি লাটিয়া বাজার এবং অন্যটি ডিবির ওসি রেজাউল করিম রিপনের বসত বাড়িতে বসানো হয়। আমি কোনো কিছু না ভেবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ওসির বাড়িতে পাম্প বসিয়েছি। কিন্তু আমার প্রতিপক্ষ লোকজন বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানোয় আমি বিল উত্তোলন করতে পারিনি।”
স্থানীয় আব্দুর রহমান বলেন, “ওসি রেজাউল করিম রিপন সম্পর্কে আমার চাচাত ভাই হয়। সে পুলিশের লোক, তাই তাকে সবাই সম্মান করে। সে হিসাবে চেয়ারম্যানও তাদের বাড়িতে একটি সাব-মার্সিবল পাম্প বসিয়ে দিয়েছেন। আমার বাড়িতেও চেয়ারম্যান একটি টিউবওয়েল দিয়েছেন।”
ঢাকা ডিবির ওসি রেজাউল করিম রিপন বলেন, “রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম মুদাব্বিরুল ইসলামের সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যান আমাদের বাড়িতে সাব-মার্সিবল পাম্প বসানোর উদ্যোগ নিলে আমি তাকে বারবার না করি। তবুও আমরা বিদ্যুত বিল পরিশোধ করতে পারব বলে চেয়ারম্যান আমাদের বাড়িতে সাব-মার্সিবল পাম্প বসিয়েছেন। এ নিয়ে সমস্যা হলে পাম্পটি উঠিয়ে নেওয়ার আহবান করছি কর্তৃপক্ষকে।”
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিন শরমিন বলেন, ওসির বাড়িতে এলজিএসপি প্রকল্পের টাকায় সাব-মার্সিবল পাম্প বসানো হাস্যকর বিষয়। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না।
“আমার মাধ্যমে উপজেলার সকল এলজিএসপি প্রকল্পের অনুমোদন হয়। কিন্তু প্রকল্প অনুমোদন করার সময় কারো নামের সাথে তার পদবি না থাকায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ময়মনসিংহ স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, ধনাঢ্য ব্যক্তির বাড়িতে এলজিএসপি প্রকল্প দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। তাই ওসির বাড়িতে প্রকল্পের টাকায় সাব-মার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রকল্পের বিল বন্ধসহ চেয়ারম্যানকে সতর্ক করা হয়েছে ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার জন্য।
“সেই সাথে ওসির বাড়ি থেকে সাব-মার্সিবল পাম্প উঠিয়ে জনবহুল এলাকায় বসানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।”