,

চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

লামা প্রতিনিধি, বান্দরবান: সদস্যের সঙ্গে প্রতারণা, বিশ্বাস ভঙ্গ ও জালিয়াতির অভিযোগে বান্দরবানের লামা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংস্থার সদস্য রুবেল ঘোষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা হলেন- লামা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান অচ্যু কুমার দাশ, সাধারণ সম্পাদক কানু কান্তি দাশ, ক্যাশিয়ার মাইকেল আইচ, সাবেক চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন ও সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দেওয়ানজী।

এদের মধ্যে ৪ নম্বর আসামি মিন্টু কুমার সেন লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান, ১ নম্বর আসামি অচ্যু কুমার দাশ লামা মুখ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও ৫ নম্বর আসামি সুকুমার দেওয়ানজী লামা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, বাদী রুবেল ঘোষ, তার বাবা রতন ঘোষ, মা কৃষ্ণা ঘোষ, বোন রুমি ঘোষ ও নিকট আত্মীয় শঙ্করানী দাশ লামা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের সদস্য। ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর বাদী রুবেল ঘোষের বাবা রতন ঘোষ ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও পারিবারিক ব্যয় নির্বাহের জন্য সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দায়িত্বরত থাকাকালীন এক লাখ আট হাজার টাকা ঋণ পাওয়ার আবেদন করেন। পরে ঋণ আবেদন মঞ্জুর হলে ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারিতে ঋণের টাকা সংগ্রহ করতে যায় তারা। এ সময় ঋণ মঞ্জুরের বিপরীতে তাদের মাত্র ৫৬ হাজার টাকা প্রদানের পাশাপাশি তিনটি স্ট্যাম্পে রুবেল ঘোষের মা, ছোট ভাই ও সমিতির বিভিন্ন রেজিস্টারে স্বাক্ষর নেন।

একই সময়ে দুইটি অলিখিত ব্যাংক চেকে রুবেল ঘোষের স্বাক্ষর নেয় বিবাদীরা। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে গেলে মামলার ১, ২ ও ৩ নম্বর আসামি কখনো সাত লাখ আবার কখনো আট লাখ টাকা দাবি করেন। এতো টাকা দারি করার কারণ জানতে চাইলে আসামিরা বাদীকে জানায়, মৃত পিতার অপরিশোধিত ঋণের টাকা রুবেল ঘোষের নামে ঋণ উত্তোলন করে পরিশোধ করা হয়েছে।
এছাড়া রুবেল ঘোষের নামে আরও দুই লাখ টাকা উত্তোলন করে রেখে দেন ৪ নম্বর আসামি মিন্টু কুমার সেন। কমিটির সাবেক ও বর্তমান সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ক্যাশিয়ারের এ প্রতারণা, বিশ্বাস ভঙ্গ ও জালিয়াতির কারণে রুবেল ঘোষ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।

পরে এ ঘটনায় জবাব চেয়ে চলতি বছরের ২৩ জুলাই আইনজীবীর মাধ্যমে আসামিদেরকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হয়। যথাযথ জবাব না দিয়ে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে কৌশলীর মাধ্যমে আদালতে জবাব দেন আসামিরা। এক পর্যায়ে সমবায় আইন অনুসারে ঋণ আদায় না করে বিশ্বাস ভঙ্গ, প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে চেকের মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করায় বুধবার দুপুরে উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন রুবেল ঘোষ।

লামা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক ও ক্যাশিয়ারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সত্যতা নিশ্চিত করে কৌশলী মোহাম্মদ শওকত ওসমান বলেন, বাদী রুবেল ঘোষের সঙ্গে আসামিরা বিশ্বাস ভঙ্গ, প্রতারণা ও জালিয়াতি করায় আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

এ ব্যাপারে লামা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানান, ঋণের টাকা পরিশোধ না করে বরং আত্মসাতের উদ্দেশ্যে আদালতে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন রুবেল ঘোষ।

এই বিভাগের আরও খবর