,

গোপালগঞ্জে মেলায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জলিরপাড় মেলার নামে টোকেনের মাধ্যমে চাঁদা নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ও অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ীরা। বিগত বছরগুলোতে মেলার নামে জোরপূর্বক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করার অভিযোগ ছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের জলিরপাড়ে শত বছর আগে থেকে দূর্গাপূজার দশমীর পরদিন নৌকাবাইচ ও মেলার আয়োজন হয়ে থাকে । আয়োজক জলিরপাড় ও ননীক্ষির ইউনিয়ন পরিষদ । প্রতি বছর মেলার নামে চলে চাঁদাবাজি । প্রতিটি দোকান থেকে টোকেন দিয়ে নেয়া হয় চাঁদা। এবছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। দক্ষিণ জলিরপাড় যুব ক্রীড়া সংঘের উদ্যোগে স্থানীয় প্রভাবশালীদের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায় করা হয়।

জলিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা নৃপেন বৈদ্য বলেন, প্রতি বছর এখানে মেলা হয় নৌকা বাইচ নামে এই মেলা বসে প্রতি বছর দূর্গাপূজার একদিন পরে। এই মেলার প্রতিটি দোকান থেকেই স্থানীয় চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালীদের ইন্দনে টাকা তোলেন এবং তা মুষ্টিমেয় কয়েকজন এই টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে খায়।

বুধবার বিকেলে জলিরপাড় মেলার মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট সড়কের বানিয়ারচর থেকে লোকের ভিড়ে গাড়ি সামনের দিকে যেতে পারছেনা । ১০ মিনিট হাঁটার পর জলিরপাড় বাসষ্ট্যান্ড। স্ট্যান্ডের পূর্বপাশের মাঠে দক্ষিণ পাশের লাইনে ৫০ টি ইলিশ মাছের দোকান। মাঠের উত্তর পাশে কসমেটিকসের দোকান সহ আরো দেড় শতাধিক দোকান । দক্ষিণ জলিরপাড় যুব ক্রীড়া সংঘ লেখা টোকেনে প্রতিটি ইলিশ মাছের দোকান থেকে নিয়েছে ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। অন্যান্য দোকান থেকে ২শ-৫শ টাকা করে নিয়েছেন সংঘের সদস্যরা ।

একটু পরে চোখে পড়ে মুকসুদপুরের সিন্দিয়াঘাট পুলিশ ফাড়িঁর উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন এবং সহকারি উপ-পরিদর্শক আবু তাহের মাছের দোকান থেকে চাঁদার টোকেন সংগ্রহ করছেন। এ বিষয় জানতে চাইলে তারা বলেন এই টোকেন কারা দিয়েছে জানার জন্য নিয়েছি।

চাঁদা তোলার সাথে থাকা উত্তম তালুকদার বলেন, আমি টাকা তোলার সাথে ছিলাম কত টাকা কি তুলেছে তা জানি না । তবে প্রতিটি দোকান থেকে তোলা হয়েছে।
মাদারীপুরে থেকে আসা ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী মিঠুন দত্ত ,আশরাফুল , হরিদাষ মিজান, মফিজুর ইকবাল , নৃপেন ও কাওছার বলেন, আমরা জানি ইলিশ মাছ ধরা, বেচা-কেনা নিষেধ। তারপরও মাছ বিক্রি করতে এসেছি। এখানে টাকা দিয়ে বসেছি। আমরা টোকেনের মাধ্যমে ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা দিয়েছি।

এ বিষয় জানতে চাইলে জলিরপাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র বৈরাগী বলেন, আমরা মাছ বিক্রি করার জন্য কোন টাকা নিতে বলি নাই। এছাড়া কোন চাঁদা নেয়ার কথা না। শুনেছি দক্ষিণ জলিরপাড় মাঠ কমিটির পক্ষ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়েছে।

ননীক্ষির ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মীনা বলেন, এই মেলায় প্রতিবছর আমরা স্বেচ্ছাসেবী দেই কিন্ত কোন প্রকার চাঁদা তোলার অনুমতি দেই না। দক্ষিণ জলিরপাড়ের যুব ক্রীড়া সংঘ প্রতি বছর চাঁদা তোলেন।

মুকসুদপুর ও কাশিয়ানীর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন চাঁদা ও ইলিশ মাছ বিক্রি করার বিষয় আমি কিছু জানিনা ।
এ বিষয় জানতে মুকসুদপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা তসলিমা আলির মুঠোফোনে কল করা হলে তা রিসিভ করেনি।

এই বিভাগের আরও খবর