নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার নবাবগঞ্জে ধর্ষণের শিকার হওয়ায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে পরীক্ষা দিতে দেননি প্রধান শিক্ষক। গত ১১ জুলাই উপজেলার বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। তবে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন ওই ছাত্রীর অভিভাবকরা।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, তার মেয়ে বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। সম্প্রতি সে ধর্ষণের শিকার হয়। বিষয়টি কাটিয়ে উঠে স্বাভাবিক হতে মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চান তারা। এজন্য গত ৯ জুন মেয়ের স্কুলের বকেয়া বেতন, জরিমানা, কোচিং ফি ও পরীক্ষার ফিসহ যাবতীয় পাওনাদি শোধ করা হয়। ১১ জুলাই মেয়েটি পরীক্ষা দিতে গেলে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম তাকে স্কুল থেকে বের করে দেন। পরে মেয়েটির মা স্কুলে গেলে প্রধান শিক্ষক তাদের নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে যান। সেখান তিনি মেয়েটিকে আর স্কুলে পাঠাতে নিষেধ করেন। তাকে ওই বিদ্যালয়ে পড়ানো হবে না বলেও জানিয়ে দেন প্রধান শিক্ষক।
নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর মা আরও বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিচারে যা হওয়ার তা হবে। তবে আমি মেয়েকে পড়াতে চাই। লেখাপড়া করতে না পারলে ও কী করবে? ওর দোষই বা কী?’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম দাবি করেন, মেয়েটির ধর্ষণের শিকার হওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তাহলে তাকে পরীক্ষা দিতে না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এর জবাব আপনাকে দেব না। আপনি সামনে আসেন।’
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকী নুর আলম বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। মেয়েটি পড়ালেখা করতে চাইলে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
দোহার থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রীর প্রধান শিক্ষক তাকে স্কুল থেকে বের দিয়েছেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচএম সালাউদ্দিন মনজুর বলেন, বিষয়টি আমি শোনার পরই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মেয়েটির লেখাপড়ার ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ২০ জুন অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ফুসলিয়ে দোহার নিয়ে যায় এক যুবক। সেখানে একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে বন্ধুদের সহযোগিতায় মেয়েটিকে ধর্ষণ করে সে। এ ঘটনায় ওই রাতেই দোহার থানায় মামলা করেন মেয়েটির মা।