রাজশাহী প্রতিনিধি: সদ্য বন্ধ ঘোষণা করা রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা বাঁশ ও লোহার রড দিয়ে শিক্ষার্থী দের পিটিয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের দিয়ে মেডিক্যাল কলেজের এমডি এ হামলা চালিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
হামলায় অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে আহত চার থেকে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের হাত ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, কলেজ বন্ধ ঘোষণার পর শনিবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকা থেকে একটি দল রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শনে আসার কথা। এ খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা বিকেলে কলেজ ক্যাম্পাসে যান। এরপর ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। পরে সবাইকে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় এমডির ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা বাঁশ ও লোহার রড দিয়ে শিক্ষার্থীদের এলোপাথাড়ি পেটানো শুরু করে। পরে শিক্ষার্থীদের চিৎকারে বাইরের লোকজন জড়ো হতে শুরু করলে গেট খুলে দেওয়া হয়। এ সময় আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এর আগে শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আর শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন করে অন্য বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ২ নভেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রাণলয়ের উপ-সচিব বদরুন নাহার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। এর আগে গত ২৫ অক্টোবর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানটি কয়েক দফায় ২২৫ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীরা আরও জানান, কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনের ভাই টিটু ও মিঠুসহ অন্যান্য কর্মচারী এবং বহিরাগত ভাড়াটে সন্ত্রাসী এমনকি ক্যাম্পাসের নারী কর্মীও (আয়া) তাদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হবে।
তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের মদদে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন- শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুজ্জামান জামান স্বাধীন।
তিনি বলেন, আমি মেডিক্যাল কলেজের অফিসে বসে কাজ করছিলাম। বাইরে হৈ-চৈ শোনার পর এসে দেখি শিক্ষার্থীরা রাস্তায়। তাদের সঙ্গে কথা বলতে পুলিশ এসেছে। শনিবার (২৮ নভেম্বর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি টিম আসার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এখানে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুম মনির জানান, শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।