,

শিক্ষিকার সঙ্গে কল রেকর্ড ফাঁস, অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি

জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর দুমকিতে শিক্ষিকার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের একটি অডিও কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে উপজেলার মুরাদিয়া আজিজ আহম্মেদ কলেজের অধ্যক্ষ আহসানুল হকের বিরুদ্ধে। তাকে দ্রুত অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

এ সময় বক্তব্য দেন কলেজ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মো. জসিম উদ্দিন আহমেদ, সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল কুদ্দুস মোল্লা, আবদুল হাকিম খান, মিল্টন হাওলাদার, আবু ইউসুফ মোল্লা, মো. আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা জাল-জালিয়াতি, সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি ও এক কলেজ শিক্ষিকার সাথে পরকীয়া ও সাম্প্রতিক কল রেকর্ড ভাইরাল হওয়ায় অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আহসানুল হকের দ্রুত অপসারণ দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, কলেজ অধ্যক্ষ আহসানুল হকের বিরুদ্ধে নিয়োগ জালিয়াতি, কলেজের অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষিকার সঙ্গে পরকীয়াসহ নারী কেলেঙ্কারির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অতি সম্প্রতি এক শিক্ষিকার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের একটি অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আহসানুল হকের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

দুমকি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল ইমরান বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।  দ্রুতই আমরা তদন্ত রিপোর্ট জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে পাঠাবো।

প্রসঙ্গত, পটুয়াখালীর একটি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও সহকর্মীর পরকীয়াসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ডে ছেদ পড়ায় বাদানুবাদের ৯ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে সর্বত্র সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে। ৩১ জুলাই বিকালে কল রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। কলেজ অধ্যক্ষ অবশ্য কল রেকর্ডটি তার নয় বলে দাবি করেন।

কল রেকর্ডটিতে শোনা যায়- কলেজ অধ্যক্ষ তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সহযোগী একই কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষিকাকে ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বলছেন-আমার বাসায় গিয়ে আমার সঙ্গে যা করছো সেগুলো কি ভিডিও করে সবাইরে দেখাইছো? আর এখন বাহিরে সব বলে বেড়াচ্ছ। তোরে আমি অনেক সুযোগ দিছি- এছাড়াও তোকে আমি অনেক কিছু দিয়েছি তুই এখন আর আমার ফোন ধরো না। এখন তোর অনেক মানুষ হইছে। তুই আর কখনো আমার সামনে আসবি না, আসলে তোর খবর আছে। আর আমি চাইলে তুই এতদিন কলেজে থাকতে পারতি না, তবে তুই কেমনে কলেজে থাকো তাও আমি দেখে নিব।

কলেজ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মো. জসিম উদ্দিন হাওলাদার অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ একজন দুশ্চরিত্রের লোক। তার নানা কুকীর্তিতে কলেজটির সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। সহকর্মী নারী শিক্ষিকাদের উত্ত্যক্ত করা তার স্বভাবে পরিণত হয়েছে। উনার কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।

ওই নারী শিক্ষকের স্বামী কল রেকর্ডের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অধ্যক্ষের দ্বারা আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। তার কুপরামর্শে আমার সংসার ভাঙার উপক্রম হয়েছে। অধ্যক্ষের অনৈতিক চাপ ও নানা প্রলোভনে স্ত্রীর দ্বারা আমার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দিয়ে দূরত্বের সৃষ্টি করেছে। আমি এখনো চাই অধ্যক্ষের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক বাদ দিয়ে সে আমার সংসারে আসুক, আমি বিনাবাক্যে তাকে ঘরে তুলতে চাই।

অধ্যক্ষ কল রেকর্ডসহ আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি প্রযুক্তির সৃষ্টি, তার বিরোধী একটি চক্র সামাজিকভাবে তাকে (অধ্যক্ষ) হেয় করতে বানানো অডিও রেকর্ডটি ছড়াচ্ছে।

ভাইরাল হওয়া কল-রেকর্ডের পুরুষকণ্ঠটি তার কিনা- প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটি তার কণ্ঠ নয়, কলেজের কিছু দুষ্টচক্র আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে এটি তৈরি করে ইন্টারনেটে ছড়িয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর