,

লক্ষ্মীপূজা; শত বছরের ‘প্রতিমার হাট’

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ:  দেবী দুর্গার বিদায়ের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ধন সম্পদের দেবী লক্ষ্মী পূজা আজ। প্রতি বছরের বছরের মত এ বছর পঞ্চমী তিথিতে লক্ষ্মী দেবীর আরাধনা করবেন গোপালগঞ্জের হাজারো হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। লক্ষ্মী হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পদ, সৌভাগ্য, সৌন্দর্য ও সুখের দেবী। তাই ধন-সম্পদ ও সৌভাগ্যের আশায় এবং পরিবারের মঙ্গল কামনায় এ দিন ঘরে ঘরে দেবীর পূজা হয়ে থাকে।

শনিবার (৮ অক্টোবর) ভোররাত ৩টা ২৯ মিনিট ৪২ মিনিট থেকে পূজা শুরু হয়ে চলবে রোববার (৯ অক্টোবর) রাত ২টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত।

গোপালগঞ্জের হাজার হাজার সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীদের বাড়িতে মন্ডপ তৈরি করে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রতিটি মন্ডপের জন্য একটি করে লক্ষ্মী মূর্তি স্থাপন করা হয়।

এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বসেছিল শত বছরের লক্ষ্মী প্রতিমার হাট। দুর্গাপূজার বিজয় দশমীর পর থেকে উপজেলার কালিগঞ্জ, পীড়ারবাড়ী, কান্দি, ধারাবাশাইল, শুয়াগ্রাম, চৌধুরীরহাট, ঘাঘর বাজার, কলাবাড়ি, রামশীল, জহরেরকান্দি, ওয়াপদারহাট, নৈয়ারবাড়ি, রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, মনোহর মার্কেট, পশ্চিমপাড়, রাজাপুর, কুশলা, লাখিরপাড় ও হিরণে প্রতিমার হাট বসেছিল।

এসব হাট থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যে যার পছন্দ মত লক্ষ্মী প্রতিমা কিনেছেন। ছোট প্রতিমা বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা এবং বড় প্রতিমা বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। যে যার সাধ্য মতো কিনছেন প্রতিমা। পাশাপাশি এসব হাটে পূজার উপকরণ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে নলডুগলি লতা, কলাগাছ, হলুদগাছ, পদ্ম ফুল ও শোলার মালা।

উপজেলার রাঢ়ীর বিল গ্রামের মৎশিল্পী অজিত পাল বলেন, ‘উপজেলার অন্তত ২০টি স্থানে শত বছর ধরে লক্ষ্মী প্রতিমার হাট বসে। আমাদের পূর্ব পুরুষেরা এসব হাটে প্রতিমা বিক্রি করেছেন। আমরাও এসব হাটে প্রতিমা বিক্রি করি। এখানে প্রতিটি হাটে আমাদের এসব অঞ্চলের তৈরি প্রতিমাই বিক্রি হয়।’

উপজেলার গোপালপুর গ্রামের সমীর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ঘরে ঘরে লক্ষ্মী দেবীর পূজা করি। লক্ষ্মী দেবী তুষ্ট হলে ধন, সম্পদ ও ফসলে ধরণী পূরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। সংসারের অভাব অনটন দূর হয়। পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে পারি। তাই প্রতিমার হাটে প্রচুর প্রতিমা বিক্রি হয়। আমরা বংশ পরম্পরা এসব হাট থেকেই প্রতিমা ক্রয় করে আসছি।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, কোটালীপাড়ার ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপূজার উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এ পূজাকে কেন্দ্র করে ৫ দিন আগে থেকে প্রায় ২০ স্থানে প্রতিমার হাট বসেছিল। শত বছর ধরে এসব হাটে প্রতিমা কেনাবেচা হয়ে আসছে। উৎসবমুখর পরিবেশে হাটগুলো থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা প্রতিমা কেনাকাটা করেন। হাটগুলো আরও শত শত বছর টিকে থাকবে বলে আমি আশাবাদী।’

এই বিভাগের আরও খবর