,

রমজানে নারীদের সওয়াব লাভের সহজ উপায়

ইসলাম ডেস্ক: ইসলাম পুণ্য ও আল্লাহর নৈকট্য লাভে নারী ও পুরুষের ভেতর কোনো পার্থক্য করেনি। নারী ও পুরুষ উভয়ে বিশুদ্ধ নিয়ত, নিষ্ঠাপূর্ণ ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীন কল্যাণ লাভ করতে পারে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে ভালো কাজ করবে তাকে আমি নিশ্চয়ই পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কাজের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব। ’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)

সওয়াব লাভের সহজ উপায় : রমজান মাসে নারীদের ঘরের কাজ বেড়ে যায়।

সবার ইফতার ও সাহরির আয়োজন সম্পন্ন করতে গিয়ে তাদের অনেকেই নফল ইবাদতের প্রতি মনোযোগ দিতে পারেন না। এমন নারীরা দুটি কাজের মাধ্যমে সহজেই সওয়াব লাভ করতে পারেন। তা হলো—

১.   নিয়ত বিশুদ্ধ করা : ঘরের কাজে আত্মনিয়োগকারী নারীরা নিয়ত করবে, আমি ঘরের রোজাদার মানুষের জন্য খাবার প্রস্তুত করছি। আমি তাদের সাহরি ও ইফতারের ব্যবস্থা করছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করায় আল্লাহ তাকে সমপরিমাণ প্রতিদান দেন; রোজাদারদের সওয়াব না কমিয়েই। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৮০৭)

২.   প্রতিবেশীদের খাবার খাওয়ান : রমজান মাসে রোজাদারকে সাহরি ও ইফতারে শরিক করা অত্যন্ত পুণ্যের কাজ। নারীরা অসহায় প্রতিবেশীদের মধ্যে খাবার বিতরণ করে সওয়াবের অংশীদার হতে পারে, যদিও তার পরিমাণ খুব সামান্য হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে সে একজন দাস মুক্ত করার সওয়াব পাবে এবং তার পাপ মার্জনা করা হবে। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের এমন কিছু নেই, যা দিয়ে আমরা অন্যকে ইফতার করাতে পারি। তিনি বললেন, আল্লাহ এই সওয়াব দেবেন যে রোজাদারকে ইফতার করায় পানি মেশানো দুধ, খেজুর বা পানি পান করানোর মাধ্যমে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৯৬৫)

নারীদের প্রতি উপদেশ : পূর্বসূরি আলেমরা রমজান মাসে মুসলিম নারীদের কয়েকটি বিষয় মেনে চলার পরামর্শ দেন। তা হলো—

১.   বাহারি রকম খাবারের আয়োজনের পেছনে না পড়া। কেননা রমজানে খাবারের আয়েশি আয়োজন রোজার উদ্দেশ্য পরিপন্থী। কেননা রোজার সংযম মানুষকে সংযমী হতে শেখায়।

২.   তাড়াতাড়ি ইফতার করা। বহু নারী রমজান মাসে ইফতার গ্রহণে বিলম্ব করে। তারা রান্না বা ঘরের অন্য কাজে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু ইসলামের নির্দেশনা হলো দ্রুত ইফতার গ্রহণ করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মানুষ তত দিন কল্যাণের পথে থাকবে, যত দিন তারা দ্রুত ইফতার গ্রহণ করবে। ’  (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৫৭)

৩.   শিশুদের রোজায় অভ্যস্ত করা। যেন তারা পরিণত বয়সে পৌঁছানোর পর সহজেই রোজা রাখতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ভালো কাজে পথপ্রদর্শন করে সে আমলকারীর মতোই সওয়াব লাভ করবে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৮৯৩)

৪.   ইবাদতে মনোযোগী হওয়া। কেননা রমজান তাদের জন্যও পুণ্য লাভের মাস। বিশেষত রমজানে অধিক পরিমাণ কোরআন তিলাওয়াত করা প্রয়োজন। আনাস (রা.) বলেন, যখন শাবান মাস প্রবেশ করত লোকেরা (সাহাবিরা) কোরআনের প্রতি ঝুঁকে পড়তেন এবং তা তিলাওয়াত করতেন, তারা সম্পদের জাকাত আদায় করতেন, অসহায় ও দুর্বল লোকদের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে কাজ করতেন যেন তারা রোজা রাখতে পারে। ’ (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ১৩৫)

এই বিভাগের আরও খবর