বিডিনিউজ ১০, রাজনীতি ডেস্ক: মহাজোট সরকারের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেরিতে হলেও উনি বলেছেন। আমিতো বারবার বলে যাচ্ছি যে, কেউ ভোট দিয়েছেন কি-না। আমি এ পর্যন্ত একজনও পাইনি যে ভোট দিয়েছেন। তাই আমি ওনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে উনি ওভারকাম করলেন।
রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুরে মতিঝিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের পর এসব কথা বলেন ড. কামাল হোসেন।
গণফোরাম সভাপতি বলেন, দেশে গণতন্ত্র থাকলে আমাদের মিটিং জনসভা করার অধিকার আছে। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি এখনও পাইনি। আজও আমরা দাবি জানাচ্ছি দ্রুত অনুমতি দেওয়া হোক। কেননা এটা কোনো দয়া মায়ার ব্যাপার না। এটা সংবিধানের ব্যাপারে। সংবিধানে লেখা আছে, সংগঠন করার অধিকার, ঘোরাফেরার অধিকার, সমাবেশ করার অধিকার, সমাবেশে মুক্তভাবে বক্তব্য রাখার অধিকার স্পষ্টভাবে লেখা আছে। আমরা যে রক্ত দিয়েছিলাম সেই রক্তির বিনিময়ে এ সংবিধান পেয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা যে ২২ অক্টোবর জনসভা করতে চাচ্ছি সেটার যেন দ্রুত অনুমতি দেওয়া হয়। কারণ ২১ অক্টোবর রাতে অনুমতি দিলে ২২ অক্টোবর সমাবেশ করা কঠিন। আজকে ২০ অক্টোবর হয়ে গেছে, এটা অনেক দেরি হয়ে গেছে। দ্রুত অনুমতি দেওয়া হোক। আমরা জনগণের কথা, ঐক্যমতের কথা তুলে ধরবো। কোনো সংঘাত সংঘর্ষ নয়, কোনো বিরোধের ব্যাপার নয়।
এসময় আ স ম আব্দুর রব বলেন, দেশ অত্যন্ত ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছে। সরকার শুধু সংবিধান নয় কোনো বিধানই মানছে না। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে। সারা জাতি আজ উৎকণ্ঠিত। যেকোনো সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। খালেদা জিয়ার একটা হাত অবশ হয়ে গেছে উনি খেতে পারেন না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবো আমরা উনাকে দেখতে যেতে চাই। তার অবস্থা কী?
তিনি বলেন, আমাদের নেতা (ড. কামাল ) বলেছেন আমরা আবেদন করেছি। উনি সংবিধান দেখিয়ে বলেছেন, উনি সংবিধান প্রণেতা। পাকিস্তান, ব্রিটিশ আমলের আইনও এ সরকারের আমলে বলবত আছে। বিশেষ ক্ষমতা আইন বলবত আছে। কোনো নাগরিক অধিকার, মৌলিক অধিকার, ফান্ডামেন্টাল রাইট বলতে যেটা বুঝায়, এ সরকার দিচ্ছে না। এখন জনগণের হাতে একটাই আছে, তাদের অধিকার যদি না দেওয়া হয়। আমাদের নেতার কথা অনুযায়ী আমরা আদায় করবো।
আবরার হত্যা কেন হয়েছে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তি নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়। সারা বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ওয়ার্ডে চাঁদা না দিলেই টর্চার সেলে নেওয়া হয়। দেশে একটা মগের মুল্লুক চলছে।
আগামী ২২ অক্টোবর আমরা আবরার হত্যা প্রতিবাদে নাগরিক শোক সমাবেশ করতে চেয়েছি। সেটা আজ পর্যন্ত অনুমতি পাইনি। সরকার বিভিন্ন রকমের গাফেলতি করছে। আমাদের এখন পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে বলছে না। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেখবো, তারা যদি আমাদের নাগরিক অধিকার, মৌলিক অধিকার না দেয়, তার বিরুদ্ধে ১৭ কোটি জনগণ বাধ্য হবে নাগরিক অধিকার আদায় করতে।
তিনি বলেন, আবরারসহ সারা দেশে আরও যাদের হত্যা করা হয়েছে তার প্রতিবাদে আমরা রক্তের অক্ষরে গণস্বাক্ষর করবো। সারাদেশে এবং বিদেশে যারা আছে। বিদেশিদের কাছেও আবেদন জানাবো। এক জায়গা থেকে শুরু হবে এবং নির্দিষ্ট কয়েকটা পয়েন্টে থাকবে। আমরা আবেদন জানাবো জাতির কাছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন জায়গায় জানাবো। আজকে যারা ক্ষমতায় আছে তারা যে অমানবিক আচরণ করছে সেটা আমরা তুলে ধরতে চাই।
বৈঠকে জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, নাগরিক ঐক্যের ডা. জাহেদ উর রহমান, মমিনুল হক, বিকল্প ধারার নুরুল আমিন বেপারী, গণস্বাস্থ্যের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঐক্যফ্রন্টের দফতর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।