মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: কৃষি প্রধান মীরসরাই উপজেলা সবজি চাষে চট্টগ্রামের শীর্ষ এলাকা। কিন্তু এবার আগাম চাষ করতে না পারায় শীতকালীন সবজিতে বাজারে ভাল দাম থেকে বঞ্চিত চাষীরা। অথচ ভাল ফলন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। দামের দিকে পোষাতে না পেরে মুখে হাসি নেই কোন কৃষকের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মীরসরাই উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মো. মুছা (৫২) ৫ শ্রমিক নিয়ে ব্যস্ত তার ফুলকপি ক্ষেতে। এ সময় ফলন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বললেন, এবার আগাম চাষ করতে গিয়ে বৃষ্টিতে ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দুইবার রোপণ করতে হয়েছে চারা। প্রায় দুই বিঘা জমিতে ৮০ হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে এখনো অর্ধেক খরচ ও উঠেনি। পুরো জমিতে ৭০ হাজার টাকা ও উঠবে না। বাকি টাকা ও শ্রম সবই লোকসান।’
এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আগাম সবজি আমাদের আগে বাজারে চলে এসেছে। আমরা আগে ফলন তুলতে পারলে আমরাই দাম বেশি নিতে পারতাম। এখন তো চারদিক থেকে সবজি বাজারে উঠে যাওয়ায় আমাদের দাম কম দিতে চাইছে বেপারীরা।
একই কথা জানান অপর সবজি চাষী জয় মঙ্গল বিপ্লব ( ৪৫)। কম খরচের জন্য নারী শ্রমিক নিয়ে ও পোষাতে পারছেন না বলে জানান তিনি। এভাবে সব মৌসুমি সবজি চাষীরই একই দশা।
কৃষক মুছা মিয়া দুঃখ করে বলেন, আমরা এখন সবজি নিয়ে বাজারে যেতে হয় না। পাইকাররা এখানেই চলে আসে সবজি কিনতে। কিন্তু চালানের সবজির আধিপত্যের জন্য স্থানীয় কৃষকরা প্রতিকূলতার শিকার হচ্ছে। এক্ষেত্রে এখানে একটি হিমাগার স্থাপন করা গেলে ন্যায্যমূল্য ও কৃষিপণ্য সংরক্ষণে অনেক সুবিধা পাওয়া যেত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষক অভিযোগ করেন, সামর্থ্যবান কৃষক যারা জমিতে ও যেতে হয় না সেসব কৃষকদের সহযোগিতা করে কৃষি বিভাগ। কিন্তু মাঠে ঘাটে খেটে খাওয়া প্রান্তিক কৃষকদের খোঁজ ও নিচ্ছে না কৃষি বিভাগ।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম জানান এবার উপজেলায় ৬৫ হেক্টর ফুলকপি ও ৬০ হেক্টর বাঁধাকপি চাষাবাদ হয়েছে। এছাড়া শিম, টমেটো, আলু, লাউ ও অনেক চাষাবাদ হয়েছে। এখনো চলছে। অন্তত ৫ হাজার কৃষক মৌসুমি সবজি চাষ করে থাকে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষী রয়েছে ৬ শতাধিক।
তিনি স্বীকার করেন যে এবার বর্ষার শেষে বৃষ্টি দেরিতে থামার কারণে মৌসুমি সবজিতে ব্যাঘাত ঘটেছে। আগাম চাষ করতে না পারায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ও স্বীকার করেন।