,

বয়স্ক ভাতা বন্ধের কারণ খুঁজতে গিয়ে জানলেন তিনি ‌‘মৃত’

জেলা প্রতিনিধি, নাটোর: সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা পেয়ে আসছিলেন ছখিনা বেগম (৮৪)। হঠাৎ তার ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। কারণ খুঁজতে গিয়ে জানতে পারলেন তাকে মৃত দেখিয়ে ভাতা বন্ধ করা হয়েছে।

ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তাকে মৃত উল্লেখ করে সমাজসেবা অফিসে দরখাস্ত দিয়ে ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী ছখিনা বেগম লালপুর উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একই গ্রামের দনি প্রামাণিকের মেয়ে এবং মৃত আ. সাত্তারের স্ত্রী।

উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই বৃদ্ধার নামে ঈশ্বরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ রঞ্জু স্বাক্ষরিত একটি মৃত্যু সনদ জমা দেওয়া হয়েছে। সনদে উল্লেখ আছে, উপজেলার নূরুল্লাপুর গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দনি প্রামাণিকের মেয়ে ছখিনা বেগম ৮ জানুয়ারি ২০২২ সালে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন। বিধবা ওই বৃদ্ধা সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতার সুবিধা পেয়ে আসছিলেন। হঠাৎ তাকে মৃত দেখিয়ে ভাতা বন্ধ করে অন্য একজনের নামে ভাতা চালু করার জন্য সমাজসেবা অফিসে আবেদন করা হয়। চেয়ারম্যানের দেওয়া মৃত্যু সনদের কারণে ওই বৃদ্ধার ভাতা সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানা যায়।

ছখিনা বেগম বলেন, হঠাৎ আগস্ট মাস থেকে তার মুঠোফোনে টাকা আসা বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাটি জানতে গত অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে তিনি তার নাতি শিমুল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে যান। সেখানে গিয়ে ভাতা বন্ধের কারণ জানতে চান।

তখন তাকে জানানো হয়, ঈশ্বরদী ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ তাকে মৃত উল্লেখ করে দরখাস্ত দিয়ে ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন। দরখাস্তে লেখা আছে, আগস্ট মাসের ৮ তারিখে তিনি ‘মারা গেছেন’। এ কথা শোনার পর তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে সেখানকার কর্মকর্তারা তাকে বলেন, চেয়ারম্যান নতুন করে আবার তাকে জীবিত দেখিয়ে দরখাস্ত দিলে সমস্যার সমাধান হতে পারে।

ছখিনা বেগমের নাতি শিমুল হোসেন বলেন, আমার নানির পরিবর্তে হয়তো অন্য কাউকে বয়স্ক ভাতার সুবিধা দিতে চেয়ারম্যান এ কাজ করেছেন। এটা অন্যায়। আমার নানির ভাতা দ্রুত চালু করা উচিত।

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ বলেন, তিনি বিষয়টি মনে করতে পারছি না। ছখিনা বেগমকে মৃত উল্লেখ করেছি কিনা, তা খোঁজ নিয়ে দেখব।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মোত্তালেব সরকার বলেন, এ ব্যপারে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাতা বরাদ্দ কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা বলেন, ‘এ ব্যপারে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর