,

‘বিয়ের নোটিশ’ পাওয়া সেই শিক্ষক বিয়ে করছেন

জেলা প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল: অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল। কনে কালিহাতী উপজেলার মগড়া গ্রামের বাসিন্দা।

২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক পদে ওই বিদ্যালয়ে যোগ দেন রনি প্রতাপ পাল। এ বছরের ২৬ জুলাই তাকে নোটিশ দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

নোটিশে তাকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। যা এলাকাজুড়ে আলোচনা সৃষ্টি করে।নোটিশ পাওয়ার দুই দিন পর সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ প্রধান শিক্ষককে লিখিত জবাব দেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘অভিভাবকরা আমার বিয়ের চেষ্টা করছেন।

কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দুদের বিয়ের পাত্র-পাত্রী বাছাইয়ে গাত্র বা বর্ণের বিষয় রয়েছে। এ ছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রাবণ থেকে কার্তিক পর্যন্ত বিয়ে করাটা শুভ মনে করে না। সুতরাং পারিবারিক ও ধর্মীয় রীতির কারণে আগামী অগ্রহায়ণ মাসে আমার অভিভাবকরা আমাকে বিয়ে করাবেন।’আর্থিক অনিয়ম ঢাকতে ও রনি প্রতাপ পালকে চাপে রাখতেই বিয়ের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

এ নিয়ে চাপের মুখে পড়েন প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনায় একাধিক তদন্ত চলমান রয়েছে।রনি প্রতাপ পাল বলেন, ‘পারিবারিকভাবেই বিয়ে করতে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছোট পরিসরে হিন্দুরীতি অনুযায়ী পত্র ও আশীর্বাদও সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিয়ের বাকি কাজ সম্পন্ন হবে। বিয়ের অনুষ্ঠানে অবশ্যই প্রধান শিক্ষককে দাওয়াত দেওয়া হবে।’ 

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিয়ে ঠিক হওয়ার বিষয়টি আমি অন্য মাধ্যমে শুনেছি। শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল আমাকে কিছুই বলেন নাই।’

শিক্ষকদের হুমকি ও অসৌজন্য আচরণের কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। দুর্নীতি-অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, তদন্ত অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।

টাঙ্গাইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা বলেন, গোপালপুরের সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নোটিশ প্রদান এবং দুর্নীতির দুটি আলাদা তদন্ত হয়েছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত রিপোর্ট বিস্তারিত ঢাকায় অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।

এই বিভাগের আরও খবর