জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী নারী।
আজ বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে ওই নারী এ ঘটনার ন্যায় বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার নাম শফিকুল ইসলাম বাদশা। তিনি উপজেলার বর্ণি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।
লিখিত বক্তব্যে ওই গৃহবধূ বলেন, ‘আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে। বর্ণি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাদশা সম্পর্কে আমার ভাসুর। তিনি নিয়মিত আমাদের গ্রামের বাড়িতে এসে ও বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনে আমাদের খোঁজ খবর নিতেন। আমাদের বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। তাই বাদশা মুন্সীকে আমরা অভিভাবক হিসাবে মান্য করি। গত ২৮ মে বাদশা মুন্সী আমার ইমো নাম্বারে কল দিয়ে তার স্ত্রীর অসুস্থ বলে জানান। স্ত্রীর সেবা করার জন্য আমাকে গোপালগঞ্জ শহরের মোহাম্মদপাড়ার বাসায় যাওয়ার জন্য বলেন।’
সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধূ আরও বলেন, ‘শাশুড়ির অনুমতি নিয়ে আমি তার গোপালগঞ্জের বাসায় যাই। বাসার ৫ তলার ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখি সেখানে শফিকুল ছাড়া আর কেউ নেই। পরিবারের সবাই কোথায় জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। তখন চলে আসতে চাইলে আমার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করেন। এ দৃশ্য তিনি মোবাইলে ধারণ করেন। আমি লোকলজ্জা ও স্বামীর ভয়ে কাউকে কিছু বলিনি। পরে গত ৯ জুন আওয়ামী লীগ নেতা বাদশা আমাকে আবারও তার বাসায় যেতে বলেন। তখন আমি তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। তাই বাধ্য হয়ে ফের গোপালগঞ্জের বাসায় গেলে ৯ তলার ফ্লাটে যাই। এর কিছুদিন পরে আবারও তার বাসায় যেতে বলেন। তখন আমি অতিষ্ঠ হয়ে আমার বাবার বাড়ি ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে বিষয়টি জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারের সম্মতিতে ১৫ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলা দায়রা ও জজ কোর্টের নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে শফিকুল ইসলাম বাদশাকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করি। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) তদন্ত করছে। তারপর থেকে মামলা তুলে নিতে আওয়ামী লীগ নেতা ও তার লোকজন আমার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই গণমাধ্যমের সহযোগিতায় ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।’
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম বাদশার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তাকে ক্ষুদ্র বার্তা পাঠালেও সাড়া পাওয়া যায়নি।