,

ফের বাড়ছে নদ-নদীর পানি-ভাঙন

জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম: ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারসহ সব নদ-নদীর পানি আবারো বাড়তে শুরু করেছে। সব নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে থাকলেও প্লাবিত হয়েছে চরাঞ্চলের নিচু এলাকা। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদ-নদীর ভাঙন তীব্র রূপ নিয়েছে।

দুধকুমারের ভাঙনে কালিগঞ্জ-নাগেশ্বরী সড়কটি হুমকির মুখে পড়েছে। কুবরিয়ারপাড় এলাকায় পাকা সড়কটি ভেঙে গেলে নাগেশ্বরী উপজেলার কালিগঞ্জ, নুনখাওয়া ও ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানিয়েছেন, ভাঙন ঠেকাতে সেখানে আগে থেকে প্রস্তুত করা বালুর বস্তা ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র ভাঙনে চর যাত্রাপুরের বানিয়াপাড়ায় গত এক সপ্তাহে ১২টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে। যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানিয়েছেন, ভাঙনের তীব্রতা বাড়ায় চর যাত্রাপুর বেড়িবাঁধ ও যাত্রাপুর বাজার ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, রসুলপুর ও রাউলিয়ার চরে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুদিনে ৫টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। ধরলা নদীর ভাঙনে গত ৩ দিনে মোঘলবাসা ইউনিয়নের শিতাইঝাড় গ্রামের ২০টি পরিবার বসতভিটা হারিয়েছে। নদীগর্ভে চলে গেছে কয়েক একর আবাদী জমি। ভাঙনের শিকার সোনাব্দি মিয়া ও দছিম উদ্দিন জানান, ভাঙা ঘর কোথায় রাখবেন সে জায়গা না পাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
সদর উপজেলার সারডোব এলাকায় আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিনের অব্যাহত ভাঙনে হুমকিতে পড়েছে আরডিআরএস বাজার ও চর সারডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করেছে।
তিস্তার ভাঙনে চিলমারীর পাত্রখাতা সংলগ্ন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুরে গত এক সপ্তাহে শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে ৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেগুলো হলো-পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ দাখিল মাদ্রাসা, মণ্ডলেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদারীপাড়া মণ্ডলের হাট নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। নদী ভাঙনের শিকার বাহাউদ্দিন বলেন, শত শত বস্তাত বালু ভরে রাখচে, ঠিকাদার ফেলায় না। হামার ঘর বাড়ি সউগ নদীত চলি গেইল। ওমরা কোনোদিন বস্তা ফেলাইবে। সৌগ শেষ হবার পর।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ভাঙন ঠেকাতে ওই এলাকায় ৭০ হাজার জিওব্যাগ বরাদ্দ করা হয়েছে। গণনা শেষে দ্রুত নদীতে ফেলা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর