,

পদ নিয়ে চিন্তা করতেন না প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সন্তান হিসেবে সংগঠন করলেও পদ নিয়ে কোনো চিন্তা করতেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা সংগঠন করতাম, কিন্তু কোনো পদ নিয়ে চিন্তা ছিল না। আমার বাবা এ দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করতেন। তাঁর আদর্শ নিয়েই পথ চলতাম।’

আজ শুক্রবার বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন এবং শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) আমাদের শিখিয়েছিলেন সাধাসিধে জীবনযাপন করতে হবে। কাজেই সিম্পল লিভিং, হাই থিংকিং—এটাই ছিল আমাদের মটো।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমার বাবার ক্ষমতা ছিল সত্যি, কিন্তু আমরা কখনো সেই ক্ষমতাকে বড় করে দেখিনি। এটা আমার মা-বাবার শিক্ষা ছিল না। আমার আব্বা ৩২ নম্বরের বাড়িতেই থেকে গিয়েছিলেন। কারণ মা বলতেন, ক্ষমতা-জৌলুশ, আরাম-আয়েশ—এসব দিকে যেন নজর না যায়। সবাইকে এভাবে মানুষ করে গেছেন আমাদের মা-বাবা।’

শেখ কামাল রাজনীতিসচেতন ও দূরদর্শী ছিলেন বলে জানান তাঁর বড় বোন শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অংশগ্রহণের কথা তুলে ধরেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরী ও শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ওসমানীর এডিসি ছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিয়তির কী পরিহাস, ১৫ আগস্ট নূরই প্রথম আসে। ফারুকের নেতৃত্বে যে গ্রুপটা আমাদের ৩২ নম্বরের বাড়ি আক্রমণ করে, সেখানে কর্নেল নূর-হুদারা ছিলেন। কামাল মনে হয় একটু ধোঁকায় পড়ে গিয়েছিল তাকে দেখে। ভেবেছিল তারা বোধ হয় উদ্ধার করতে এসেছে। কিন্তু তারা যে ঘাতক হয়ে এসেছে, সেটা বোধ হয় জানত না। কারণ প্রথমে তারা কামালকে হত্যা করে। এরপর একে একে পরিবারের সব সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে।’

শেখ কামালের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কামাল বহুমুখী প্রতিভার অধিকার ছিল। একাধারে সে হকি, ফুটবল ও ক্রিকেট খেলত। ভালো সেতার বাজাত, ভালো ছাত্র ছিল এবং ভালো গান গাইত। নাটকে অংশগ্রহণ করত এবং উপস্থিত বক্তৃতায় সব সময় পুরস্কার পেত।’

শেখ কামাল সব সময় অত্যন্ত সাদাসিধেভাবে চলাফেরা করতেন বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘তার পোশাক-পরিচ্ছদ, জীবন-যাপন খুবই সীমিত ছিল। এমনকি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির ছেলে বা প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হিসেবে কোনো অহমিকা ছিল না তার। খুব সাধারণভাবে জীবনে চলা—এটাই ছিল তার লক্ষ্য।’

দেশের যুবসমাজ ক্রীড়াঙ্গন ও সাংস্কৃতিক চর্চায় যাতে এগিয়ে আসে, সে জন্য সরকার কাজ করছে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি চাই, আমাদের যুবসমাজ খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চা, সমাজসেবা—এসব দিকে যেন আন্তরিক হয়, নিজেদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করে। সে জন্য আমরা যখনই ক্ষমতায় এসেছি তখনই চেষ্টা করেছি ক্রীড়া জগৎটাকে আরও উন্নত করতে, সাংস্কৃতিক জগৎটাকে আরও উন্নত করতে।’

ক্রীড়াঙ্গনের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৯ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এ পুরস্কার তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশিদ, স্পন্দন শিল্পগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য কাজী হাবলু, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর