খুলনা : জেলায় বাঙ্গি জাতীয় ফল নালিম চাষাবাদে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে।
স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে অধিক ফসল এবং অর্থ ঘরে তুলতে পারছেন কৃষকেরা।মাত্র ৩০ দিনে প্রতিটি গাছ থেকে হাজার টাকা আয় হচ্ছে। অধিক মুনাফা হওয়ায় কৃষকরা এখন নালিম চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
কৃষি দপ্তরের সূত্র মতে, নালিম লাউ, কুমড়ার মতো লতা জাতীয় গাছ। গাছ মাচাঁয় অথবা মাটিতে বিছিয়ে থাকে। নালিমের রঙ বাঙ্গির মতই। কাঁচা অবস্থায় এটি সবুজ, পাকলে গাঢ় হলুদ ও সুগন্ধি হয়। এছাড়া ফলটি চিনিমুক্ত, স্বাদও বাঙ্গির মতই। নালিম ফলের আকার ছোট ও গোলাকার। প্রতিটি ফল ৩ থেকে সাড়ে ৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রায় ৩ মাসের জীবনকাল থাকায় খুব অল্প সময়ে কৃষকরা এটি বিক্রির মাধ্যমে নগদ অর্থ ঘরে তুলতে পারেন। এটি ঘেরের আইল অথবা পেয়ারা বাগানের সাথি ফসল হিসেবে চাষ করা যায়। আবাদ পদ্ধতিও বাঙ্গির মত। বাণিজ্যিক মুনাফার কারণে কৃষকদের কাছে অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে নালিম চাষ।
খুলনার ডুমুরিয়ার উপজেলার শরাফপুর এলাকার কৃষক মো. সারোয়ার হোসেন সরদার গত বছর আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে নালিম দেখে আগ্রহী হন। মাত্র ৪টি নালিম বীজ এনে নিজ বাড়ীর আঙ্গিনায় রোপণ করেন তিনি। সেই গাছের ফল থেকে বীজ তৈরি করেন। চলতি বছরের ভাদ্র মাসে সেই বীজ রোপনের মাত্র ২৮-৩০ দিনের মাথায় ফল পান, বিক্রিও শুরু করেন তিনি।
মো. সারোয়ার হোসেন সরদার আরো জানান, এ বছর ঘেরের আইলে এবং বসত বাড়ীর আঙিনায় প্রায় ৫০টি বীজ বুনি। কিন্তু গোড়ায় পানি জমে যাওয়ায় কিছু গাছ মরে যায়। এরই মধ্যে ৫০টির বেশি ফল বিক্রি করেছি। প্রতিটি নালিম বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। নালিম চাষাবাদে পরিচর্যা তেমন লাগে না। লবণাক্ত জমিতেও এর চাষ করা যায়।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোসাদ্দেক হোসেন জানান, নালিম একটি উচ্চমূল্যের ফসল, ডুমুরিয়ার আবহাওয়া নালিম চাষের জন্য অনুকূল। ঘেরের আইলে সবজির পাশাপাশি এটা চাষ করলে কৃষক অত্যন্ত লাভবান হবেন। এটি সম্প্রসারণে আমরা কাজ করবো এবং আগামীতে এর আবাদ এলাকায় আরও বৃদ্ধি পাবে।
খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পঙ্কজ কান্তি মজুমদার জানান, নালিম বাঙ্গির অনুরূপ একটি ফল। এটির বাণিজ্যিক গুরুত্ব ক্রমশ: বৃদ্ধি পাওয়াই ভবিষ্যতে এটির চাষ আরও বাড়বে। আমরা সে লক্ষ্যে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। বাঙ্গির বিকল্প ফল হিসেবে নালিম মানুষের কাছে এটি জনপ্রিয়। নালিম খেলে শরীর ঠান্ডা ও সতেজ হয়। বাণিজ্যিক মুনাফার কারণে জেলার কৃষকদের কাছে অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে নালিম চাষাবাদ।