বিডিনিউজ ১০, স্বাস্থ্য ডেস্ক: নাক ডেকে ঘুমানো অনেক মানুষের একটা সমস্যা। যিনি নাক ডাকেন তিনি তো মজাতেই ঘুমান, কিন্তু ঘুম হারাম হয়ে যায় বাকীদের। এ নিয়ে অভিযোগের অন্ত থাকে না। ঝগড়া-ফ্যাসাদ এমনকী বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত হয়ে যায়! পরিবারের অভিযোগ ছাড়া সেভাবে কেউ কখনও মাথাই ঘামান না এই সমস্যা নিয়ে। কিন্তু জানেন কি, অনেক বড় বিপদ অপেক্ষা করে আছে নাক ডাকা রোগীদের জন্য? যার পরিণতি হতে পারে মৃত্যু!
আধুনিক জীবনযাত্রা ও পরিবর্তিত খাদ্যাভ্যাসের ফলে ঘুমের মধ্যেও মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে বলে মত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। এমনিতেই মেদ বৃদ্ধি, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা ইত্যাদি কারণে ঘুমের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সম্প্রতি নাক ডাকার অভ্যাসকেও ‘নিরাপদ’ ঘোষণা করছেন না চিকিৎসকরা। শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা ছাড়াও স্লিপ অ্যাপনিয়াকেও এই অতিরিক্ত নাক ডাকার কারণ হতে পারে। ডাক্তারদের মতে, স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণেও নাক ডাকার এই সমস্যা হতে পারে, যার পরিণতি হৃদরোগ। এতে বেড়ে যাচ্ছে মৃত্যুর ঝুঁকি।
►স্লিপ অ্যাপনিয়া
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক হেলথ জার্নালের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেখানকার প্রায় ৩ কোটি মানুষ এই স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত। জার্মানির মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের মত, স্লিপিং ডিসঅর্ডারের এই সমস্যা হৃদপিণ্ডের ডান এবং বাঁ দিকের ভেন্ট্রিকলেরখুব ক্ষতি করে, ফলে শ্বাসপ্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাই নাক ডাকাকেও একেবারেই অবহেলা করা উচিত নয়। অনেকে মনে করেন, বয়স হলেই মানুষ নাক ডাকে। এবার পুরনো এসব ধারণা বাদ দিন। স্লিপিং অ্যাপনিয়ার শিকার হচ্ছেন কি না, তা জানতে চিকিৎসকের শরণ নেওয়া উচিত।
►উপসর্গ
স্লিপ অ্যাপনিয়ার মূল উপসর্গই নাক ডাকা। এ ছাড়াও সারাদিন একটানা ক্লান্তি, ঘুমঘুম ভাবের সঙ্গে আচমকাই খিটখিটে মেজাজের শিকার হলে শরীরে এই অসুখ বাসা বাঁধছে কিনা তা নিয়ে সাবধান হোন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমিয়ে পড়ার পর ঘাড় ও গলার পেশি শিথিল থাকে। ফলে স্লিপিং ডিজঅর্ডার থাকলে শ্বাসযন্ত্রে চাপ পড়ে ও শ্বাসপ্রক্রিয়া বাধা পায়। এতে মস্তিষ্ক ও শরীরের কোষগুলিতে অক্সিজেন সরবরাহ হঠাৎ করেই অনেকটা কমে যায়। ফলে স্লিপ অ্যাপনিয়ার প্রভাবে আকস্মিক শ্বাসপ্রক্রিয়া ব্যহত হয়ে মৃত্যু হতে পারে।
► কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?
• স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা আছে বুঝলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
• চিকিৎসার সঙ্গে ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন।
• খাওয়ার ঠিক পরেই শুয়ে না পড়ে একটু হাঁটাহাঁটি করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো প্রয়োজনীয় যোগব্যায়াম করুন।
• হজমের সমস্যা কমান। এতে নাক ডাকার সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্ত হওয়া যায়।
• শোয়ার ভঙ্গি পরিবর্তন করুন। চিত হয়ে না শুয়ে এক পাশ ফিরে ঘুমালে শ্বাসযন্ত্রের উপর চাপ কম পড়ে।