বিডিনিউজ ১০, মাগুরা: মাগুরায় সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের হোস্টেল ছাত্রীদেরকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে উত্যক্ত ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। হোস্টলে অবস্থানরত ছাত্রীদের বেশ কিছুদিন ধরে এমন কাজ করে আসছে ছাত্রলীগ নেতারা। কলেজ প্রশাসন নিশ্চুপ-নির্বিকার রয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) হোস্টেলের ছাত্রীদের নিরাপত্তার দাবিতে তারা কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষ ঘেরাও করেন।
কলেজের হোস্টেলে বসবাসরত ছাত্রীদের অভিযোগ, তারা সোমবার (২১ অক্টোবর) কলেজ অধ্যক্ষ দেবব্রত ঘোষের কাছে অভিযোগ জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা না উল্টো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উপরন্তু তিনি ছাত্রীদের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রীর জানিয়েছে, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ফাহিম ফয়সাল রাব্বিসহ ছাত্রলীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী দীর্ঘদিন ধরে নির্বিঘ্নে হোস্টেলে যাওয়া-আসা করছে। প্রায়ই তারা হোস্টেলের ছাত্রীদের রান্না করে খাওয়ানোর জন্য বাধ্য করেন। মাঝেমধ্যে তাদের হাতে ছাত্রীরা লাঞ্ছিত হয়ে আসছে। অথচ বিষয়টি জানার পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে না। উল্টো কোনো কোনো শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাত্রদের এ বিষয়টি মেনে নিয়ে চুপ থাকার নিদের্শ দেন।
হোস্টেলে নিবাসী এক ছাত্রী আভিযোগ করেন, রোববার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টায় রাতের খাবার শেষ করে অন্যান্য মেয়েদের সঙ্গে নিচ থেকে রুমে ফেরার সময় দেখি হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি ভাই একটি মেয়ের সঙ্গে অশালীন আচরণ করছেন। এসময় একটু দূরে আরও তিন-চার জন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। তখন মেয়েটি কাঁদতে থাকলে অন্য মেয়েরা তাকে সেখান থেকে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেগুলো তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে আহত করে। আহত ওই মেয়ের আভিযোগ- ঘটনার পর পুরো বিষয়টি হোস্টেলের মেট্রোন (তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত) নাসরিন আপাকে জানানো হলেও তিনি আমাদের চুপ থাকার জন্যে নির্দেশ দেন। কিছুক্ষণ পরই হোস্টেলে পুলিশ আসে। কিন্তু নাসরিন ম্যাডামের ভয়ে কেউ পুলিশের কাছে কিছু জানাতে সাহস করেনি।
হোস্টেল মেট্রোন নাসরিন আক্তার বলেন, শিক্ষার্থী লাঞ্ছনার বিষয়টি সঠিক নয়। রোববার (২২ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে কলেজের কয়েকজন ছাত্র পোলাওয়ের চাউল আর মুরগি নিয়ে হোস্টেলে এসে রাধুনিকে খাবার রান্না করে দিতে বলে। পরে রান্না শেষ হলে খাবার নিয়ে চলে যায়।
বিষয়টি নিয়ে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ফাহিম ফয়সাল রাব্বির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এঘটনার প্রতিবাদে ছাত্রীরা নিরাপত্তার দাবিতে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) কলেজ অধ্যক্ষর কক্ষ ঘেরার করে। তখন কলেজ অধ্যক্ষ দেবব্রত ঘোষ তার গৃহিত পদক্ষেপ উল্লেখ করে ছাত্রীদের ফিরিয়ে দেন।
এবিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ দেবব্রত ঘোষ জানান, ছাত্রীরা আভিযোগ করারর আগেই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে হোস্টেলে দায়িত্বয়রতদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারপরও ছাত্রীদের দল বেধে তার কক্ষে যাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।