আলোকে বরণ করো, দ্যাখো আমি দু’হাত তুলেছি
বনভূমি পাড়ি দিয়ে ভোরবেলা শস্যক্ষেত হবো
আমার মৃত্যুর দিনে মা আমাকে দেবে দুধভাত
যতটা বালক আমি তত মুগ্ধ এই আঁখিতারা।
ভ্রুপল্লবে কেঁপে ওঠে গুহামুখে নিদ্রাহীন ফুল
সবুজের একতারা, এই তার নির্জনের ধ্বনি
আশ্রমের কবুতর দ্যাখো আমি ফুলের শোণিতে
দিগন্ত ভাসিয়ে তবু নিজ রক্তে রেখেছি দহন।
এসেছি নিজের ভোরে। সব আলো আকাশে মেলেছি
হিমবাহ কেটে গেলে আমি তার চূর্ণ ধরে রাখি
দ্যাখো এত শুভ্র ফুল কার নামে খুলেছে হৃদয়
তাদের সবার লাশ তুলে আনি অন্ধকার থেকে।
২০ নভেম্বর ১৯৯৩
বিপরীত বর্ষা
মেঘের সঙ্গে কথা হবে ভয়ানক
চূড়ান্তরূপ বোঝাপড়া হবে আজ
মেয়েটিকে যদি কাঁদাতেই হবে তবে
বৃষ্টিকে কেন শিখিয়েছে কারুকাজ?
আকাশের সাথে আজ হবে একহাত
দিগন্তে কেন ভাসিয়েছে জলাধার
পৃথিবীকে যদি ডুব দিতে হবে জলে
অতীত দিনের স্মৃতি কেন বারবার?
আজ কেন এই মেঘে-বিদ্যুতে খেলা
জানালায় কেন বৃষ্টির ঝড়ো সুর
বাতাসেই যদি ভেসে যাবে সব কথা
আজ কেন মন টান দেয় বহুদূর।
খোলা জানালায় জল ভরা এই চোখ
কাঁদতে এসেছে চরাচরে মুখ গুঁজে
বৃষ্টিকে যত নূপুর পরাও আজ
বিরহী শালিক অশ্রুকে নেবে খুঁজে।
আজ বোঝাপড়া বিপরীত বর্ষায়
আজ বোঝাপড়া হৃদয়ের দর্পণে
তুমি মেঘ যত মত্ততা আনো, হানো
বুকের মাদক, মনে পড়বেই মনে।
১৯৯৬
একটি নিষ্কাম কবিতা
আলিঙ্গন তীব্র হলে ভালোবাসা শ্বাসকষ্টে ভোগে
বস্তুত এসব ভেবে এতকাল আলিঙ্গনে বিরত থেকেছি
ফলত অগ্নিতে আমি ঘড়াভর্তি জল ঢেলে ঢেলে
এক ভোরে তোমাকে পেয়েছি তপস্যায়
তুমিও আমার মতো শ্বাসকষ্টে কাশি শ্লেষ্মা পরিহার করে
শিশির পতন থেকে স্বর্গসুখ কুড়াতে এসেছ
জেনেছ অন্যত্র মুক্তি, নেশা ও মাংসের লোভ, ধর্ষকাম
আত্মার পীড়নে
যেটুকু অর্জন তার সব জাগতিক।
প্রার্থনা মানব ধর্ম। এই বৃক্ষ ছায়াতলে
গাছের বাকল পরে
সবুজ পাতার সঙ্গে, পাখিবন্ধু ফুল ও পরাগে
প্রার্থনা করেছি আমি, বলেছি আকাশ দাও
আজ মুগ্ধ বাতায়নে বসি
বুকের পাথর সব সরে যাক, যুবতীর নীল অন্তর্বাসে
কাম ও দংশন চিহ্ন মুছে গিয়ে সুন্দরের জয়ধ্বনি হোক…
আজ এই সুন্দরের পথে আমাদের নিষ্কাম মিলন-ঋতু
অশত্থের গভীর ছায়ায় আমাদের যুগলবন্ধন
কুড়িয়ে পেয়েছ তুমি আমাকেই বিরহবিহীন ঘরে
বাতাস-মুদ্রিত দেহে অলৌকিক নখ-বিলেখনে
আমাকে পেয়েছে তুমি উদ্যানের বসন্তশয্যায়
এখন এখানে শুধু বাউলের ভূমধ্য-কবিতা
তোমার শোবার ঘরে অপার্থিব পাতার বাসর।
মে ১৯৯৯
ভোরের মেয়েকে
সকালে দেখছি পাখিদের আনাগোনা
ধূলিকে বলেছি আমার সঙ্গে হাঁটো
তোমাকে বলেছি আরো সুন্দর তুমি
যদি আনমনে কুন্তলে বিলি কাটো।
মেয়েটি তবুও একা হতে চায়, একা
বন্ধু বিমুখ, বিমুখতা অপরাধ
চোখের পলকে সন্ধ্যাতারাও খসে
অন্যজনের পতনের অপবাদ
তাকে কেন দেবো? জল দিতে পারি পায়ে
অন্তত পথে পা-ফুটুক, সুবাতাস―
আমার সঙ্গে না হাঁটার বেদনাকে
ইনিয়ে বিনিয়ে বানাবো না ইতিহাস।
যা কিছু লিখবো, সরাসরি কথা হবে
পরের বাক্য লিখবো না সকাতরে
যদিও দেখছি কী অবাক, ঊষাকালে
সমূহ কবিতা মেয়েটিতে ভর করে।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০০
ছাত্রীনিবাস
ছেলেরা সবাই হল গেটে দারোয়ান
মেয়েরা সবাই নিঝুম রাত্রি বাড়ি
ছেলেরা ফিরতে গভীর রাতেও পারে
মেয়েরা ফিরলে প্রশ্ন করতে পারি।
রাত নয়টায় নিয়মের তালা ঝোলে
তার আগে তুমি যুগল ফুচকা খাও
যতটা ইচ্ছে বন্ধুর সাথে হাঁটো
এটুকু সময় দিতে পারি আমরাও।
এই বিভাজন সামাজিক বলে জানি
অসম রাত্রি তোমার শুচিতা চায়
তোমার দেরিতে নারীবাদী রুমমেট
সেও ফিরে যায় শাসনের সংজ্ঞায়।
ভেতরে ঘুমিয়ে প্রথা ও পিতৃকাল
তোমার আগুনে ভাসে বেহুলার তরী
অধীনতা চেয়ে কলাভবনের গ্রামে
নারীমুক্তির পোস্টার বিলি করি।
রাতের সমতা পুরুষের অধিকারে
আমরা তোমার মহল পাহারাদার
তোমাকে নিয়ে যে জোছনাও চিন্তিত
সব রোকেয়ার সাখাওয়াত দরকার।
২৮ এপ্রিল ২০০৩
এই দেশ তাঁতিপাড়া থেকে দূরে নয়
অনেক নদী পার হয়ে যে দেশে আসি, সে দেশ চিনি না
কমলালেবুর মতো চাপা, রসালো গোলকে এই দেশ ছিল, আছে
গোলার্ধ ভুল হলে কম্পাস আছে, চুম্বকে আস্থা রেখেছি
কিন্তু চশমার কাচে যা পড়ছে ধুলো নয়, বৃষ্টিও নয়
উত্তর বা দক্ষিণও নয়
যেসব গাছের দেখা তারা কেউ জন্মায় না মাটিতে
কোথায় যে জন্মায়? শেকড়ের ধারণা নিয়ে এই প্রশ্নে ক্লান্ত পথশ্রম
তবু বৃক্ষসব পত্রময়, শুধু শাখা প্রতিরাতে নিজেরই হারানো ডালে
ঘুরে ঘুরে ন্যাড়া হয়ে যায়
একটাই পরিচিত ঋতু, শীত
অথচ এই দেশে চাদরের বিকিকিনি নাই!
এই একটা ভালো দিক, আমারও শীত লাগছে না
এক বস্ত্র ময়লা হলে অন্য বস্ত্র প্রয়োজন নাই
উদোম শরীর মানে শিল্পের ভাষা―এই পর্যবেক্ষণের ফাঁকে
মসলিনের দু-একটি কাটা আঙুল নড়ে উঠতে দেখে ধারণা করেছি
এই দেশ তাঁতিপাড়া থেকে দূরে নয়।
১২ সেপ্টেম্বর ২০০৬
বৃষ্টির গ্রামে
বৃষ্টির গ্রামে আমরাই ছেলেপুলে
ঝাঁপাই পুকুরে―ন্যাংটা, কাপড় ছাড়া
আমরা ছাড়াও ন্যাংটা গাছেরা আছে
বৃষ্টি চাইছে সবাই মাতাক পাড়া।
পাড়া মাতাতেই এসে গেছে পোলাপান
প্যান্টের ভাজে শিস দেয় জলধারা
ভাসমান এই ফেরিঘাটে হইচই
অচেনা পোশাকে দাঁড়িয়ে রয়েছে কারা!
দাঁড়িয়ে দেখছি, ভিখিরির মতো মেঘ
এক ফোঁটা জল নামিয়ে দিচ্ছে গাছে
সেখানে পাখির ভেজা পালকের ওমে
পুকুরে ঝাঁপানো কবিতাটি লেখা আছে।
২৩ জুলাই ২০০৩
শিরোনামহীন
বাহ্যত আমি আকাশ কুড়াতে এসে
তোমাকে দিয়েছি সাধারণ রতিকাল
গ্রীবা ভঙ্গুর অচেনা সড়কপথে
ওত পেতে থাকে পাখি-শিকারির জাল।
কিছু ধস নামে বিগত লুপ্ত স্রোতে
কিছু স্মৃতিমুখ হারানো বর্তমানে
ব্যাকরণ ভুলে উপগত অধিকাল
উৎকেন্দ্রের প্রথাগত চোখে হানে।
কিছু পাখিকাল শুকনো পাতায় হাঁটে
কিছু মর্মরে বান্ধব আজও ধূলি
পাতা-কুড়োনিকে বলেছি তোমার কথা
সে এসে ফোটাক লুণ্ঠিত ফুলগুলি।
আকাশ পর্বে নিম্নবর্গ আজও
যাপিত স্বপ্নে বহু অধিকার বাকি
জেলেপাড়া থেকে নগরের প্রশ্রয়ে
ভালোবাসি তবু শিরোনামহীন থাকি।
১ সেপ্টেম্বর ২০০৮
উড়ে যাওয়া বাতাসের ভাষা
হয়তো ঝড়ের সঙ্গে পৌঁছে যাবো তোমার সকাশে
উড়ে যাওয়া বাতাসের ভাষা শিখে নিচ্ছে আমাদের শ্রেণি
সহপাঠীদের মুখে যেটুকু ধুলোর স্পর্শ, ক্লেদ ও বিভ্রম
তার জন্য ব্লাকবোর্ডে লিখে রাখি দিগন্তের পথ―
উড়ে যাওয়া ধুলো, বলো আজ কাকে নেবো?
বলো হে অম্লান মাটি আমিও কি পথে পথে ঝরাপাতাদের শোক?
কী লিখি সুতীব্র মেঘে? ভোরের উন্মুখ গান?
লোকায়ত পাঠ্যক্রম, স্মৃতি ও আগামী?
আর যে দিয়েছ তুমি ধ্বংস ও সৃজন সন্ধ্যা
চৈত্র সংক্রান্তির শেষে মুগ্ধ কোন প্রণয়ের লিপি―
এই পাঠে জাতিস্মর, আমারও প্রস্তুতি আজ
ধাবমান বাতাসের মুখে তুলে দেয়া প্রভাত সঙ্গীত
আমারও প্রস্তুতি আজ একখণ্ড নদী রাষ্ট্রে
অক্ষরের অপূর্ব উত্থান।
৫ এপ্রিল ২০১২
স্নানঘর
আজ জরুরি হয়ে পড়েছে বৃষ্টির মুখোমুখি হওয়া
আজ নিজের ভেতর ভেজা শালিকের দ্রোহকাল।
অনন্ত স্নানঘরে আমাদের যৌথ আকাশ
বর্ষাতি হারিয়ে ফেলা বালক, তোয়ালেতে
মুখ মোছার আগে নড়ে উঠছে বানভাসি পাতার শব্দ
তাই নিয়ে আমাদের দূর অবগাহনের দিন―
ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে সাঁতার শেখা খাড়িমুখ
ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে ভেজা শরীরের স্বেদবিন্দুর চিৎকার
সেখানে মুখোমুখি আয়না ও আর্দ্র কাক
ব্যক্তিগত বোঝাপড়ার আগে ঝাঁপ দিচ্ছে
বর্ষাঋতুর বাঙালপনায়।
১৯ আগস্ট ২০১০
আমিও সত্যজল
রাত্রিলিপি, আমারও কিছু গান আছে
আমারও বসন্ত আছে, উন্মুখ, ধূলিবর্তী, পাতাময়
ঝরে পড়বার আগে শোনো ছায়া―
নিদ্রাহীন কারো পাশে
আমার গভীর গান, শ্রাবণের নতজানু প্রার্থনার ভাষা
হয়তো পাঠের ছলে শুক্লপক্ষে ষোড়শী বেদেনি
যে নৌকা ভাসিয়ে দিয়েছে
সেখানে উদ্বাস্তু কোনো খাড়িমুখে
আমিও সত্যজল, নদীশব্দ, রবীন্দ্রসঙ্গীত।
৫ ডিসেম্বর ২০১২
মোমবাতি
মোমবাতি জ্বেলে দাঁড়িয়ে দেখছে মেয়ে
পাশের বাড়ির দেয়ালের রং সাদা
কবুতরগুলো পায়রা হয়েছে কবে
ছেলেটা দারুণ, চিঠি দেবো একগাদা?
ডাকপিয়নের খবর কোথাও নেই
কেউ লিখছে না দোয়াত কলমে আজ
কান্নার দিন পার হয়ে ফেসবুকে
চন্দনবনে মিডিয়ার কারুকাজ।
তবু দুইচোখে পতঙ্গ প্রাণ পোড়ে
এপাশ ওপাশ; জাগরণ থেকে শেখা
শেষরাত্রিতে ধূলিওড়া সংহিতা
হৃদয়ে প্রেমের স্মারকগ্রন্থ লেখা।
আমিও লিখছি দেয়ালের অভিলাষ
আমিও লিখছি সন্ধ্যার অনুভব
রাত জাগো তুমি, চিঠি লেখো, ছিঁড়ে ফেলো
আমাকে পাঠাও উত্তাপ, কলরব।
এবার লিখবো পুরোনো ইশতেহার
দিন-শ্রমিকের শ্রমজীবী নিবেদন
আমিও জাগছি মাতালের তরণিতে
নদীতীরে আমি ফেলে আসি বন্ধন।
যৎসামান্য পিপাসায় তবু ডাকি
সাধারণ জলে মোমবাতি, দীপাবলি
সম্ভব নয় দেয়াল টপকে এসে
না বলা কথাটা আজকে তোমাকে বলি।
২২/০৫/২০১৮, অপরাজিতা
প্যারিস
এখানে দীর্ঘ এক সড়কে হেঁটে বেড়াচ্ছে পরাবাস্তব শহর
শীত ও ফুলের মাতামাতিতে আরো সুপ্রাচীন জাদুঘর ও পানশালা
যে নদীতে ভ্রমণ করতে বেরিয়েছি তার পাশে উঁচু হয়ে আছে ইস্পাতের কাঠামো
তবু নারী দেহ জীবন্ত, স্তন উন্মুক্ত ভাস্কর্যে ঢেউ দিচ্ছে সেইন নদী
সাঁজেলিজে আমার প্রিয় রাস্তা, প্যারিস আমার প্রিয় শহর
এখানে সুরা ও নারীর মাঝখানে লেখা হয়েছে নন্দনগুচ্ছ, বখে যাওয়া কবিতাগুলি
এখানে যুদ্ধ স্মৃতির চেয়ে তুলির আঁচড় বেশি দৃশ্যমান
এখানে পাথরের গায়ে খোদিত সভ্যতার গতি স্বপ্ন
আমি বোদল্যের, র্যাবো, আপনাদের সঙ্গে আড্ডা দিতে এসে গেছি
এক মহাদেশ ছুঁয়ে অন্য মহাদেশে ব্যাকুল ভেসে বেড়াচ্ছি
ব্রাত্য কবিতার মাতাল তরণিতে
ইনফেন্ট টেরিবলের কবিতার নারকীয় মুগ্ধতায় বুঁদ হয়ে আছেন ভেরলেন
আড্ডার অবসরে দাদাবাদী ইশতেহার লিখছেন ত্রিস্তা জারা
মালার্মে ছুড়ে দিয়েছেন দুর্বোধ্য কবিতার ডাইস
তাই দিয়ে অক্ষরের নেকটাই বানিয়েছেন অ্যাপোলিনের
তবু এ শহর শেষ হয় না
এখানে মমার্তে এসে ছবি আঁকতে বসে যান ফুটপাতের শিল্পী পিকাসো
ডালির গোঁফ দেখে থমকে যায় সুররিয়ালিজমের তুলি
ক্লদ মনের শাপলা ফুল দেখতে দেখতে ক্যানভাসে ছড়িয়ে পড়ে অপরূপ ভোর
এখানে ক্যামুর মতো কেউ কেউ খুঁজে পান বহিরাগত আকাশ
এখানে ঝলমলে ভার্সাইয়ের পাশে দরিদ্র জীবন বেছে নেন শ্রী মধুসূদন
এখানে কিলোমিটার জিরোতে দাঁড়িয়ে আছে মহাকালের বইঘর
শেক্সপিয়ার অ্যান্ড কোম্পানি
দোতলার ভবঘুরে কবিতা পাঠের আসরে বসে আছে
বিট জেনারেশন : গিনসবার্গ, করসো, ফারলিংগেটি
বই পাগল হুইটম্যানের উন্মাদনায়
এখানে তরুণ লেখকরা সবাই টাম্বলউইড
এখানে ক্যাফে দ্যু মঁগোতে আমি আড্ডা দিতে এসে গেছি
এখানে ক্যাফে লা ফ্লুতে আমি আড্ডা দিতে এসে গেছি
এখানে এই আমি চল্লিশ দশকের আমি
এখানে এই আমি পঞ্চাশ দশকের আমি
এখানে এই আমি ষাটের দশকের আমি
এখানে এই আমি সত্তরের দশকের আমি
আমার সঙ্গে এখানে বসে আছেন সার্ত্রে ও বুভ্যেআ
বসে আছেন হেমিংওয়ে
তাঁদের সঙ্গে ব্রেকফাস্ট খেতে খেতে শহর দেখছি আর লিখছি
এই ফাঁকে এসে গেছেন আরাগঁ, ব্রেতঁ-এসে গেছেন সবাই
এখানে কফির চুমুক মানে কবিতার পরাবাস্তব উষ্ণতা
এ শহর কখনো শেষ হয় না
১১/১০/২০১৭, প্যারিস থেকে দুবাইগামী ফ্লাইটে
বাঁশপাতাদের ঋণ
পেরিয়ে এসেছি সাকো। যে জীবন মহাসড়কে উঠে গেছে
সে এখন অনির্দিষ্ট লোকালয়
তার হাত ধরতে ধরতে তুমি হারিয়ে ফেলেছ চিত্রকল্প
আর যে ছন্দজ্ঞানে আমাদের অশরীরী ক্ষুৎপিপাসায়
টীকাভাষ্য লিখেছিলে ঠোঁটে
সেখানে অরক্ষিত চাঁদে কিছু স্বপ্ন রেখে দিয়ো ফের
ফিরে আসবোই আমি। বাঁশপাতার ঋণ শোধবার আগে
ফিরে আসবোই আমি সামান্য কবিতায়।
২৮/০৪/২০১৬, অপরাজিতা