বিডিনিউজ ১০, ডেস্ক: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম পাটকল শ্রমিকদের ১১ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, বর্তমান সরকারের আমলে গণহারে চাকরিচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটছে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দলের সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর সই করা বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান। এছাড়া মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে না নেওয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ফখরুল।
বিবৃতিতে সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বর্তমান ‘অবৈধ’ সরকার নিজেদের জনদরদি বলে দাবি করলেও তারা যে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ও তামাশা করে তা আবারও প্রমাণ হলো। শ্রমিকরা একটা দেশের মূল চালিকা শক্তি, তাদের ঘাম ঝরানো পরিশ্রমেই দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হয়। শ্রমিকদের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই তাদের পারিশ্রমিক পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আমাদের ধর্মে।
মির্জা ফখরুল বলেন, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনি প্রচারণায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ক্ষমতায় আসলে জনগণকে ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানোসহ ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়া হবে। অথচ বাড়ি বাড়ি চাকরি দেওয়া দূরের কথা, যারা চাকরিতে আছেন তারাও বর্তমান সরকারের আমলে পাইকারিহারে চাকরিচ্যুত হচ্ছেন।
পাটকল শ্রমিকরা তাদের বকেয়া না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে দাবি করে তিনি বলেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রাখলেও সরকার সম্পূর্ণরূপে নির্বিকার। অনশনরত শ্রমিকরা অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা সংকটাপন্ন, কিন্তু সরকার এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। ইতোপূর্বে অনশনরত অবস্থায় খুলনায় প্লাটিনাম জুবিলি জুটমিলের শ্রমিক আব্দুস সাত্তার মারা গেছেন। তার মতো পরিণতি যাতে আর কোনো শ্রমিকের না হয় সেজন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করি। সরকার বিরোধী দল ও মতের মানুষদের নিশ্চিহ্ন করে দীর্ঘকাল ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার চিন্তায় বিভোর থাকার কারণেই জনগণের ভালমন্দ দেখার সুযোগ বর্তমান সরকারের নেই।
বিএনপির শীর্ষ নেতা আরও বলেন, পাটকল শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি বিএনপি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে। তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আমি জোর আহ্বান জানাচ্ছি।
জাতীয় মজুরি কমিশন রোয়েদাদ ২০১৫ বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চলছে। অনশনরত পাটকল শ্রমিকদের মধ্যে ২০ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।