,

এসিল্যান্ডের বদলিতে হতাশ কাশিয়ানীবাসী

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: মহামারি করোনাভাইরাসের কঠিন সময়ে কাশিয়ানী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিন্টু বিশ্বাসের বদলীতে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

মিন্টু বিশ্বাস সোমবার বিকালে তাঁর কর্মস্থল কাশিয়ানী উপজেলা ভূমি অফিস থেকে রিলিজ নেন। পরের দিন মঙ্গলবার গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পদোন্নতি পেয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে যোগদান করেছেন। তাঁর স্থলে আতিকুল ইসলাম নবাগত সহকারী কমিশনার হিসেবে যোগদান করেছেন।

দক্ষ, কর্মোদ্যোমী ও জনবান্ধব এ কর্মকর্তার অপ্রত্যাশিত বদলীর খবরে হতাশা ও ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাধারণ মানুষের নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেক ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে নানা ধরণের মন্তব্য লিখেছেন।

এসিল্যান্ড মিন্টু বিশ্বাস কাশিয়ানীতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিয়ে মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ ও হোম কোয়ারিন্টাইন নিশ্চিত করাসহ সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে দিনরাত মাঠে করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

তিনি ২০১৯ সালের ৪ মার্চ কাশিয়ানীতে সহকারী কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন। মাত্র এক বছরে পাল্টে দিয়েছেন কাশিয়ানী উপজেলা ভূমি অফিসের চিত্র। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিশ্চিত করে সেবাগ্রহীতাদের কাছে উপজেলা ভূমি অফিসকে আস্থা ও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছিলেন। তিনি নিয়মিত তদারকি, সরাসরি অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত মিসকেস (নামজারি জমাভাগ খারিজ সংক্রান্ত) মামলা শুনানির মাধ্যমে খুব কম সময়ে নিষ্পত্তি করতেন।

পাশাপাশি অফিসের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন, সৌন্দর্যবর্ধন, অফিস চত্ত্বরে বৃক্ষরোপণ করে নজির স্থাপন করেছেন। এছাড়া তিনি সরকারি সম্পত্তি রক্ষা, বাজার মনিটরিং ও বাল্য বিবাহ বন্ধে সবসময় তৎপর ছিলেন। এভাবে তিনি সাধারণ জনগণের কাছে একজন প্রিয় কর্মকর্তা হয়ে ওঠেন।

সরকারী চাকরি বিধি অনুযায়ী তিনি বদলী হয়ে চলে গেলেন। কিন্তু কাশিয়ানীতে তিনি রেখে গেছেন সেবার দৃষ্টান্ত। হঠাৎ বদলীর খবরে কাশিয়ানীর মানুষ ব্যধিত হয়েছেন।

মাহমুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, ‘এসিল্যান্ড মিন্টু বিশ্বাস একজন জনবান্ধব কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি মানুষের সেবায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। হঠাৎ বদলীজনিত কারণে তাঁর চলে যাওয়া আমরা মেনে নিতে পারছি না। তিনি সারা জীবনের কাশিয়ানীর মানুষের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন।’

কাশিয়ানীবাসীকে উদ্দেশ্য করে মিন্টু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন আপনাদের মাঝে ছিলাম। একজন সেবক হিসেবে কতটুকু সেবা দিতে পেরেছি জানি না। তবে জনগণের সেবক হিসেবে সব সময় মানুষের সেবা করার চেষ্টা করেছি। কেউ যদি আমার কোন কর্মকান্ড ও আচার-আচরণে কষ্ট পেয়ে থাকেন ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এটাই আমার প্রত্যাশা।’

এই বিভাগের আরও খবর