জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের তিন ঠিকাদারকে শৈলকূপা উপজেলা এলজিইডি অফিসে ডেকে লাঞ্ছনা ও তাদের কাজের মোট টাকার ২ শতাংশ ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী ঠিকাদাররা হলেন-ঝিনাইদহের সাজেদুর রহমান নিপুল, শুভঙ্কর দত্ত গোবিন্দ ও রিয়াজ উদ্দিন।
এই তিন ঠিকাদার শৈলকূপার ২১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রাচীর নির্মাণের ইজিপি দরপত্রে অংশগ্রহণ করেন এবং কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করেন। অভিযোগকারী এই তিন ঠিকাদার লাঞ্ছিত ও ২ শতাংশ টাকা দাবির অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহের এলজিইডি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগের অনুলিপি দেন তারা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অভিযোগকারী ঠিকাদাররাসহ শতাধিক ঠিকাদার উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ইজিপি দরপত্রে অংশ নিয়ে যোগ্যতা অর্জন করেন তারা তিনজন। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী তাদের কাছে কাজের মোট টাকার ২ শতাংশ হারে টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অসন্তুষ্ট হন তিনি। তবে তারা ১ শতাংশ হারে টাকা পরিশোধ করেন এবং চুক্তির সব শর্ত পূরণ করে চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে দ্বারস্থ হন। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। পরে চাপাচাপিতে উপজেলা প্রকৌশলী রওশন হাবিব অবসরে যাওয়া কমিউনিটি অর্গানাইজার ফজলুর রহমানকে দিয়ে ফোন করে তাদের চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য অফিসে আসতে বলেন। গত বুধবার সকালে তারা তিন ঠিকাদার অফিসে এলে উপজেলা প্রকৌশলী তাদের কাছে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে তা আগে সমাধানের কথা বলেন। তারা অপারগতা প্রকাশ করলে তার অফিসে বহিরাগতদের দিয়ে তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
ঠিকাদার সাজেদুর রহমান নিপুল অভিযোগ করেন, তাদের পাওয়া কাজের চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করতে উপজেলা এলজিইডি অফিসে গেলে প্রকৌশলী বহিরাগতদের দিয়ে তাকে ও তার দুই সহকর্মীকে লাঞ্ছিত করেন। কমিউনিটি অর্গানাইজার ফজলুর রহমান জানান, প্রকৌশলীর নির্দেশে তিনি তাদের অফিসে আসতে বলেন। তবে ঠিকাদার লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জানান।
উপজেলা প্রকৌশলী রওশন হাবিব বলেন, ইজিপি টেন্ডারে কাজ পাওয়া তিন ঠিকাদার চুক্তি স্বাক্ষর করতে তার অফিসে এলে স্থানীয় কিছু সমস্যার কথা তাদের তিনি বলেন। তবে লাঞ্ছিতের কোনো ঘটনা তার অফিসে ঘটেনি। কোনো টাকাপয়সা তাদের কাছে দাবি করা হয়নি। এটা মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ।
ঝিনাইদহ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ার উদ্দীন জানান, অভিযোগের বিষয়টি তিনি জানেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।