হোসনেয়ারা রুমা: আমার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম শাহাদাৎ হোসেন ১৯৫১ সালে আগষ্ট মাসে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাইককান্দি গ্রামে এক সাধারণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে পাইককান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থায় তিনি বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশ মাতৃকার টানে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন।
ল্যা: এম, মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে প্রথমে গোপালগঞ্জ নিলার মাঠে প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন এবং পরে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের চাকুলিয়া প্রশিক্ষন কেন্দ্রে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন।
ভারত হইতে প্রশিক্ষণ শেষে কমান্ডার সরদার আবুল বাশার এর নেতৃত্বে অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং প্রথমে যশোর জেলার শালিখা থানার তালকড়ি নামক স্থানে পাক সৈন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং সেই যুদ্ধে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
আমার বাবার সহযোদ্ধা মো. আহাদ আলীও সেই যুদ্ধে শহীদ হন। দেশের মধ্যেও কয়েক জায়গায় খন্ড যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। বড়দিয়া যুদ্ধেও অংশ গ্রহন করেন এবং সেই যুদ্ধে বাবার সহযোদ্ধা বাচ্চু মুন্সী শহীদ হন। শহীদ আহাদ আলী ও শহীদ বাচ্চু মুন্সীর কথা মনে হলে আমার বাবার চোখে এখনও দেখি পানি ও অন্য মনষ্ক হয়ে পরেন।
আমার বাবা দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অস্ত্র জমা দেন এবং নিজ ছাত্র জীবনে ফিরে আসেন। তিনি কর্ম জীবনে ১৯৮০ সাল হইতে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তৎকালীন থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্ব সুনামের সাথে পালন করেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ অবদি তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সুখে দুঃখে পাশে থেকে তাদের কল্যানের জন্য কাজ করেছেন। এই দেশ প্রেমিক মানব দরদী বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য অফুরন্ত ভালবাসা,শুভকামনা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। তিনি আর কেউ নন। আমারই বাবা আমার গর্ব, আমারই অহংকার।
বিজয়ের এই মাসে তাকে সহ সকল মুক্তিযোদ্ধাদের জানাচ্ছি শ্রদ্ধা।