,

৭০ বছর ধরে হচ্ছে কাশিয়ানীর ‘যে নামযজ্ঞ’

কাশিয়ানী প্রতিনিধি: হাজারো ভক্তের আগমনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো কাশিয়ানী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জিকাবাড়ী সার্বজনীন শ্রীকৃষ্ণ সেবাশ্রমের চারদিনের নামযজ্ঞানুষ্ঠান।

গত সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) অধিবাসের মধ্যদিয়ে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। আজ শুক্রবার ভোগ মহোৎসবের মধ্যদিয়ে শেষ হয়। অনুষ্ঠানকে সফল ও উৎসবমুখর করতে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে নেয়া হয় নানা উদ্যোগ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের জিকাবাড়ী সার্বজনীন শ্রীকৃষ্ণ সেবাশ্রম মন্দির চত্বরে ১৯৬০ সাল থেকে হয়ে আসছে এ অনুষ্ঠান। এ অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের মহামিলনের অনুষ্ঠান এটি। শুধু কাশিয়ানী, গোপালগঞ্জ অঞ্চলই নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা হাজার হাজার ভক্তের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠে আশ্রম প্রাঙ্গণ। শুধু সনাতন ধর্মের মানুষ নয়, সকল সম্প্রদায়ের মানুষ সনাতন ধর্মের ভক্তদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

এ অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে মেয়ে-জামাই ও আত্মীয়-স্বজনদের নিমন্ত্রণ করে থাকেন।

মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: এনামুল হক মিরাজ বলেন, ‘জিকাবাড়ির নামজ্ঞানুষ্ঠানটি অনেক পুরানো। অনেক আগে থেকেই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আমরা ছোট বেলা থেকে এ নামযজ্ঞ দেখে আসছি। এটি মাহমুদপুর ইউনিয়ন তথা কাশিয়ানী উপজেলার প্রাচীন ঐতিহ্য।’

আশ্রমে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নিজ অর্থায়নে খাবারের ব্যবস্থা করে থাকেন একই গ্রামে কৃতি সন্তান ও ঢাকার বিশিষ্ট ট্যানারী ব্যবসায়ী নিরাপদ বিশ্বাস। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ আহারের ব্যবস্থা করে আসছেন।

তিনি আবেগআপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমার বাবা বেঁচে থাকতে আমরা ভক্তদের ফ্রি খাবার দিয়ে আসছি। আমার বাবা আজ বেঁচে নেই। তার রেখে যাওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমি প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয় করে ভক্তদের আহারের ব্যবস্থা করে থাকি। এটি অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবো।’

জিকাবাড়ী গ্রামের সাধন মজুমদার বলেন, ‘জিকাবাড়ী আশ্রম সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে একটি তীর্থ স্থান। অনুষ্ঠানকে ঘিরে গোটা এলাকায় উৎসবে পরিণত হয়। কাঠ, বাঁশ, মাটির খেলনা, চানাচুর, মিষ্টিজাত দ্রব্যসহ নানা খাবার ও খেলনা সামগ্রীর পসরা নিয়ে দোকানীদের সমাবেশ ঘটে।’

এই বিভাগের আরও খবর