জেলা প্রতিনিধি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর (৪০) অনিয়ম-দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে তাকে মারধর ও অফিসে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ইউসুফ আলীকে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সেবাগ্রহীতারা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে নানা রকম অনিয়ম-দুর্নীতি ও হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার অনিয়মের প্রতিবাদ জানাতে কয়েক মাস আগে শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের দলিল লেখকরা প্রায় তিন মাস কর্মবিরতি পালন করেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তারা কাজে ফিরলেও ইউসুফ আলীর অনিয়ম-দুর্নীতি চলতেই থাকে।
জানা যায়, শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সাবেক এক কর্মচারী অবসরে যাওয়ার পর মারা যান। এরপর তার স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী কন্যা সন্তানের অনুকূলে পেনশনের টাকা প্রাপ্তির জন্য সুপারিশ নিতে সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর কাছে প্রায় ১৫ মাস ধরে ঘুরেও কোনো সমাধান মেলেনি। কাজ না করে উল্টো হয়রানির অভিযোড় ওঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই উত্তেজিত জনতা ইউসুফ আলীকে বেধড়ক মারধর করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানকার চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ইউসুফ আলীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন দলিল লেখক জানান, আমরা বাধ্য হয়ে ইউসুফ আলীর নানা অন্যায় আবদার মেটায়। দলিল সম্পাদনে দাতা ও গ্রহীতার তথ্য ও কাগজপত্র শতভাগ সঠিক থাকার পরও অতিরিক্ত টাকা প্রদান না করলে তিনি দলিল সম্পাদন করেন না। সম্প্রতি একজনের কাছ থেকেই পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন। দৈনিক প্রায় দুই শতাধিক দলিল সম্পাদন হয়ে থাকে, যার কোনটিই তিনি অতিরিক্ত টাকা ছাড়া করেন না।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বলেন, শুনেছি, অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। তিনি সব কাজ টাকা নিয়ে করে দেন- এমন অভিযোগ রয়েছে। এমন ক্ষোভ থেকেই মারধরের ঘটনা ঘটতে পারে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার আফসানা বেগম বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। তবে বিস্তারিত ঘটনা জানা নেই।