,

‘মিনিকেট নামে ধান আছে, চালও হয়’

জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ: মিনিকেট নামে ধান আছে, আর সেই ধান থেকে মিনিকেট চালও উৎপাদন হয়। চাল কেটে-ছেঁটে ছোট ও সরু করার ধারণা ভ্রান্ত বলে দাবি করেছেন নওগাঁর চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার দুপুরে নওগাঁয় ধান্য চাল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির নিজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ধান্য চাল আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরদ বরন সাহা চন্দন বলেন, ‘৩০ বছর সময় ধরে বাজারে কমবেশি মিনিকেট চাল আছে। অথচ কখনো কখনো বলা হচ্ছে মিনিকেট নামে কোনো ধান নাই। নওগাঁ, নাটোর ও কুষ্টিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে মিনিকেট জাতের ধান পাওয়া যায়। তাহলে এটি কোনো ধান?

‘প্রচার করা হচ্ছে, মোটা চাল চিকন করে মিনিকেট চাল হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছে; বর্তমান সময়ে কথাটি বদলে নতুনভাবে বলা হচ্ছে বিআর-২৮, বিআর-২৯ জাতীয় ধানের চাল সুপার পালিশ করে মিনিকেট চাল হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে।’

সম্প্রতি চালের দামের ঊর্ধ্বগতির পর সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মিনিকেট নামে বাজারে যে চাল বিক্রি হয় সেটি মোটা চাল থেকে পলিশ করে হয়। আর সেই চাল বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

মোটা চাল ও সর্বোৎকৃষ্ট মানের চালের (মিনিকেট) বাজারমূল্যে পার্থক্য প্রতি কেজিতে ১৫-১৭ টাকা। বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতীয় চালের দামের পার্থক্য ৭-১০ টাকা কেজি।

মোটা চাল কেটে বা ছেঁটে চিকন করে মিনিকেট নামে বিক্রির যে কথা বলা হয় সেটি সামঞ্জস্য নয় বলে দাবি করেন নিরদ বরন সাহা।

বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন মহল ব্যবসায়ীদের ওপর দায় চাপিয়ে বলেন, ‘মোটা জাতের চাল কেটে মিনিকেট চাল তৈরি করা হয়। কিন্তু দেশ-বিদেশে চাল কাটা কিংবা সরু করার কোনো মেশিন আবিষ্কার হয়নি। এভাবে প্রতিনিয়তই ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কিছু ব্যক্তির স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে।’

নিরদ বরন সাহা আরও বলেন, ‘বলা হয় মিল মালিকরা মজুত করে চালের দাম বৃদ্ধি করছে। আপনারা জানেন, চাল উৎপাদনের কাঁচামাল হচ্ছে ধান। ধানের দাম ও আনুষঙ্গিক উৎপাদন মিলিয়ে চালের দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে। ধানের দাম বৃদ্ধি পেলে চালের দাম স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় এটাই বাস্তবতা। সরকারের পর্যায়ে থেকে ভোক্তা পর্যায়ে আমাদের সকলেরই চিন্তা-ভাবনা কৃষক তাদের উৎপাদিত ধানের ভালো দাম পাবে। অপরদিকে চালের দাম সস্তা হবে।

‘আমরা মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা কোনো রেশনের দোকান বা দাতব্য খানা খুলি নাই। বর্তমানে চলমান ইরি মৌসুমের শুরুতে ধানের দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। স্বাভাবিকভাবে চালের দামও বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই অবস্থায় খাদ্য বিভাগ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থারসহ নিজস্ব জনবল নিয়োগ করে সারা দেশে মিল মালিক ব্যবসায়ীদের গুদামে মজুত বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে।’

দু-একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকার মজুতের কোনো তথ্যই পায়নি বলে দাবি করেন এই ব্যবসায়ী।

তিনি সরকারের কাছে দাবি জানান, যেন বাজার খুব ভালোভাবে মনিটর করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর চাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেলকন গ্রুপের মালিক বেলাল হোসেন, জেলা অটোমেটিক মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল ইসলামসহ অন্য চাল ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর