,

হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ইউএনওর জিডি

ফরিদপুর প্রতিনিধি: হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে শরিফুল ইসলাম নামের এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদ এলাহী। ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি পরিচয়দানকারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ইউএনও গত শুক্রবার আলফাডাঙ্গা থানায় জিডিটি করেন।

এর আগে প্রতিকার চেয়ে ইউএনও তৌহিদ এলাহী ৮ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। লিখিত অভিযোগে তিনি বলেছিলেন, সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম তাঁর মুঠোফোনে কল করে সরকারি খাসজমিতে (এসএ নং ১৫৭৫ ও বিএস নং ৪৯০) আশ্রায়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য ঘরের কাজ বন্ধ করার হুমকি দেন। একপর্যায়ে ইউএনওকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

শরিফুল ইসলামের বাড়ি আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চর কাতরাসুর গ্রামে।

ইউএনওর কার্যালয়ের সূত্রের দাবি, সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম কুচিয়া গ্রামে সাড়ে ৫৪ শতাংশ সরকারি খাসজমিতে বাসভবন নির্মাণ করে বাস করছেন, যা এসএ রেকর্ড দাগ নং ১৫৬৭, বিএস রেকর্ড দাগ নং ৪৯০ উভয় রেকর্ডেই জেলা প্রশাসনে ১ নম্বর খাত খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত। এর বাইরে তাঁর পরিবার ওই এলাকার বিপুল খাসজমি অবৈধভাবে ভোগদখল করছে।

জেলা প্রশাসকের কাছে ইউএনওর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে তিনি দেখেছেন যে জায়গা আশ্রয়ণ প্রকল্প হচ্ছে, সেটি খাস সম্পত্তি। ১৯৬২-৬৪ সালের মধ্যে বিএস রেকর্ড হয়েছে। তাতে ওই জায়গা খাস সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছে। সরকারি উদ্যোগে আশ্রায়ণ প্রকল্প শুরু হওয়ার পর গত নভেম্বরে ওই জমির রেকর্ড সংশোধনের আবেদন হয়েছে। তিনি বলেন, জমির মালিক তাঁরা (শরিফুলের পরিবার) হয়ে থাকলে এত পরে সংশোধনের আবেদন করবেন কেন?

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, অভিযোগের সত্যতা না থাকলে ইউএনওর মতো দায়িত্বশীল ব্যক্তি কেন সেটি করবেন? বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম ইউএনওকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, যে জায়গায় আশ্রায়ণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, সে জায়গা থেকে আধা কিলোমিটার সরিয়ে করা হলে কোনো ব্যক্তির সমস্যা হতো না। তাঁর ভাষ্য, এই প্রস্তাব দেওয়ার পর ইউএনও তাঁর অবস্থানে অনঢ় থাকেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ইউএনওদের এমন অনমনীয় আচরণের কারণে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের মতো ঘটনা ঘটে।

এই বিভাগের আরও খবর