বিডিনিউজ ১০ ডটকম: আজ বিজয়া দশমী। ৫ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার শেষ দিন। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় এ উৎসব।
সোমবার সজল নয়নে ভক্তরা দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার চরণে অঞ্জলি দিয়েছেন। দেবীর বন্দনায় প্রতিটি পূজামণ্ডপে ছিল বিষাদের ছায়া। ঢাকঢোল, কাঁসর-ঘণ্টাসহ বিভিন্ন বাদ্য, ধূপ আরতি ও দেবীর পূজা-অর্চনায় শুধুই ছিল বিদায়ের সুর। সেই সঙ্গে ছিল করোনামুক্ত বিশ্বের প্রার্থনাও।
সকালে বিহিত পূজার মাধ্যমে শুরু হয় নবমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পুরাণ মতে, এ তিথিতে দেবী দুর্গার আশীর্বাদ নিয়ে লঙ্কার রাজা রাবণকে বধ করেছিলেন দশরথ পুত্র শ্রীরামচন্দ্র। এছাড়া ১০৮টি নীলপদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন রামচন্দ্র। তাই এ মহানবমীতে ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে পূজিত হয়েছেন দেবী দুর্গা। নবমী সন্ধিক্ষণে অনুষ্ঠিত হয়েছে সন্ধিপূজা। মহিষাসুর বধের সময় দেবী দুর্গা প্রচণ্ড ক্রোধে কৃষ্ণবর্ণ রূপ ধারণ করেছিলেন। তাই পূজার এ আচারের সময় দেবীকে চামুণ্ডা রূপে পূজা করা হয়েছে।
শাস্ত্রে আছে, নবমী পূজার মাধ্যমে মানবকুলে সম্পদলাভ হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী, শাপলা, শালুক ও বলিদানের মাধ্যমে রোববার দশভুজা দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নীল অপরাজিতা ফুল নবমী পূজার বিশেষ অনুষঙ্গ। নবমী পূজায় যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে আহুতি দেয়া হয়। ১০৮টি বেলপাতা, আম কাঠ ও ঘি দিয়ে এ যজ্ঞ করা হয়। পূজা শেষে যথারীতি অঞ্জলি।
সনাতন বিশ্বাস ও বিশুদ্ধ পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছেন দোলায় (পালকি) চড়ে। যার ফল হচ্ছে মড়ক। আর দেবী সপরিবারে স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন গজে (হাতি) চড়ে। যার ফল হচ্ছে শস্যপূর্ণ বসুন্ধরা। বিজয়া দশমী উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। জাতীয় দৈনিকগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করবে।
নবমীর দিনে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী রোববার ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেন এবং পুণার্থীদের সঙ্গে পূজার নানা আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন। এ সময় পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।
এদিকে জীবানুমুক্তভাবে নিশ্চিন্তে পূজা করতে ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, বনানী মাঠ পূজামণ্ডপ, জয়কালী মন্দিরসহ অন্যান্য পূজামণ্ডপে হ্যান্ড স্যানিটাইজিং স্ট্যান্ড স্থাপন করে স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্র্যান্ড সেপনিল।