গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জে আন্তঃজেলা বৈদেশিক মূদ্রা (রিয়াল) প্রতারক চক্রের ২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ সময় তাদের কাছ থেকে পুলিশ নগদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও প্রতারকাজে ব্যবহৃত ১ টি গামছার কুন্ডলি উদ্ধার করে।
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে সদর সার্কেল অফিসের একটি টিম ফরিদপুর জেলার ভাংগা উপজেলার বালিয়া এবং মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট থেকে রোববার তাদের গ্রেফতার করে।
এ ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ফরিদুপর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার বালিয়া গ্রামের মৃত রাজ্জাক ব্যাপারীর ছেলে মতিন ব্যাপারী (৫৭) ও একই গ্রামের ধলা মৃত ধলা মিয়ার ছেলে সিরাজ মিয়া (৪৫) ।
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনে জানান, প্রতারক মতিন ও সিরাজ বাসে যাত্রীবেশে পাশের সিটে বসে গত ৭ আগস্ট কোটালীপাড়া উপজেলার সোনাখালী গ্রামের মসজিদের ঈমাম আ. রাজ্জাক গাজীকে সৌদি রিয়াল দেখিয়ে বলে সৌদি ফেরত তাদের এক গরীব আত্মীয়র কাছে ২০/৩০ হাজার সৌদি রিয়াল রয়েছে। কিন্তু তিনি গরীব হওয়ায় লোকজন সন্দেহ করবে বলে বিক্রি করতে ভয় পাচ্ছেন। তাই রাজ্জাকে রিয়াল বিক্রি করতে সাহায্য করলে তারা খুব উপকৃত হবে বলে জানান। তখন রাজ্জাক রিয়াল যাচাই করে সঠিক মনে হওয়ায় নিজেই কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। সে মোতাবেক গত ২৫ আগস্ট প্রতারক চক্রের সদস্যরা রাজ্জাককে ৫ লক্ষ টাকাসহ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভেন্নাবাড়ি বিশ্বরোডের সামনে আসতে বলে। সেখানে প্রতারক চক্রের ৩ সদস্য রাজ্জাককে ১ টি শপিং ব্যাগে গামছা দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় সৌদি রিয়ালের বান্ডিল দেখায়। ওই রিয়ালের জন্য রাজ্জাক ৫ লক্ষ টাকা প্রদান কর। প্রতারক চক্রের সদস্যরা রিয়ালের পরিবর্তে অন্য শপিং ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে টাকা নিয়ে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে। পরে মোবাইল বন্ধ করে দেয়।
প্রতারক চক্রে সদস্যরা একই কায়দায় গত ৮ জুন নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার কবির মোল্লা ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা, ১৮ জুন টুঙ্গিপাড়ার আলিম শিকদারের ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ১০ মে কোটালীপাড়া উপজেলা বাদল কাজীর ৯৫ হাজার টাকা সহ মোট ১০ লক্ষ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে ভূক্তভোগীরা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করে। পরে মোবাইল ট্রাকিং ,আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২ প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান,জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত প্রতারক চক্রের সদস্যরা পুলিশকে জানায় তারা ৮/১০ জনের গ্রুপ মিলে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন কায়দায় ইতিমধ্যে শতাধিক লোককে প্রতারিত করে ৮০/৯০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। প্রতারক চক্রের বাকী সদস্যদেরও শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনে ।
গ্রেফতারকৃত প্রতারকদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে রিয়াল প্রতারনার দায়ে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান।