নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ শহরে বসবাস করেন গৃহবধূ রাজিয়া সুলতানা। ফ্লাট বাসায় জ্বালানি খড়ি ব্যবহারে অসুবিধা হতো। এজন্য তিনি গত চার বছর থেকে রান্না করছেন সিলিন্ডার গ্যাসে। গ্যাস শেষ হলেই ফোন করে জানালে নতুন আরেকটি সিলিন্ডার দিয়ে যান দোকানি। তবে এ সিলিন্ডারের মেয়াদ আছে কীনা বা কতটা নিরাপদ এবং ঠিকমতো ব্যবহার বিধি জানেন না তিনি। শুধু রাজিয়া সুলতানা নয়। জেলার বেশির ভাগ মানুষই জানেন না সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবহার বিধি।
বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহারের একটি অংশ হিসেবে জ্বালানি কাজে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। সামান্য অসচেতনার কারণে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। ঝুঁকি জেনেও সুবিধা হওয়ায় এখন বাসা-বাড়ি ও হোটেল-রেস্টুরেন্টে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সিলিন্ডার। সচেতন মহল মনে করছেন সিলিন্ডার ব্যবহারকারীদের একটি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেয়া হলে প্রাণহানির ঘটনা হ্রাস পেতে পারে।
শহরের দয়ালের মোড়ের সুলতান মাহমুদ ও মোজাম হোসেন বলেন, বর্তমানে বাড়িতে জ্বালানি হিসেবে সিলিন্ডার গ্যাস রান্নার কাজে খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। এটি খড়ির তুলনায় সহজবোধ্য।
শহরের দয়ালের মোড়ে মেসার্স দেওয়ান ট্রেডার্স এর মালিক ডিএম শাহানুর শাবিব শানু বলেন, লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছি। ডিলারের কাছ থেকে সিলিন্ডার কিনি। প্রত্যেক সিলিন্ডারে উৎপাদের মেয়াদ থাকে। কিন্তু মেয়াদ উর্ত্তীণের তারিখ থাকে না। কোম্পানির লোকজন বলেন, সিলিন্ডারের ক্ষমতা ৫০ বছর। এরমধ্যে কোনো ক্রুটি থাকলে বাদ দেয়া হবে। বাসা-বাড়িতে ব্যবহারের জন্য যারা কিনে নিয়ে যান, তাদের বলে দেয়া হয় গ্যাস বের হলে দূর্গন্ধ হবে। তখন যেন জ্বালানির কাজে ব্যবহার না করে।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১১টি উপজেলায় ইটভাটা, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানের চাতালসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনন্ত দুই হাজার বিস্ফোরক লাইসেন্স রয়েছে।
নওগাঁ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’র উপ-সহকারী পরিচালক একেএম মুরশেদ বলেন, সিলিন্ডার গ্যাস এখন বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করতে দেখা যায়। ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে তারা ব্যবসা করছেন। জননিরাপত্তার কারণে এবং শর্ত থাকে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও বালু, পানি অন্যান্য থাকতে হবে। জরুরিভিত্তিতে সংবাদ দেয়ার জন্য ফায়ার স্টেশনের নম্বর রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জেলায় পাঁচটি স্টেশন চালু আছে। অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরক থেকে রক্ষা পেতে প্রতি মাসে ২০টি গণসংযোগ ও মহড়া প্রদর্শন করে সচেতনতা বাড়ানো হয়। গ্যাসের চুলা ব্যবহারে কি কি সমস্যা আসতে পারে এবং কীভাবে মোকাবেলা করা হবে এ বিষয়গুলো জনগণকে বোঝানো হয়।